প্রকৃতির বৈচিত্র্য: ডারউইনবাদীদের নাইটমেয়ার-১

|

Add caption
ডারউইনবাদীদের দাবি অনুযায়ী বিবর্তন তত্ত্ব প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগতের বৈচিত্র্যকে ব্যাখ্যা করে। অথচ একটু গভীরভাবে ভেবে দেখলে দেখা যায় প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগতের বৈচিত্র্যই আসলে বিবর্তন তত্ত্বের জন্য নাইটমেয়ার। কেননা প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগত যত বেশী বৈচিত্র্যময় হবে, তত বেশী কল্পকাহিনীর আশ্রয় নিতে হবে সেই সব বৈচিত্র্যময়তাকে ব্যাখ্যার জন্য। প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগত বরঞ্চ সরলরৈখিক হলেই হয়ত কিছু বলার থাকতে পারতো। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। বাস্তবে প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগত এত বেশী বৈচিত্র্যময় ও বিষমরৈখিক যে, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ তো দূরে থাক, প্রতি পদে পদে কল্পকাহিনী ফাঁদা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। অথচ অসচেতন লোকজনকে বিজ্ঞানের নামে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
তবে বৈচিত্র্য বলতে যদি একই প্রজাতির মধ্যে পরিবেশগত কারণে কিছু পরিবর্তন বুঝানো হয় তাহলে কারোরই কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে ডারউইনবাদীরা কথায় কথায় প্রকৃতি থেকে উদাহরণ দিলেও প্রকৃতিতে এত অদ্ভুত সুন্দর সুন্দর উদ্ভিদ ও প্রাণী থাকতে তাদের লেখাতে সহজে জীবন্ত উদ্ভিদ ও প্রাণীর ছবি দেয়া হয় না। তাদের লেখাতে ঘুরেফিরে কিছু জীবাশ্ম আর ভাঙ্গা-চুড়া হাড়-হাড্ডি দিয়ে তৈরী করা ছবি দেখানো হয় – বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আবার বিশ্বাসের সাথে মিল রেখে নিজের মতো করে তৈরী করা কাল্পনিক ছবি।


যাহোক, বিবর্তন মানে হচ্ছে ক্রমবিকাশ তথা সময়ের সাথে কোন কিছুর পরিবর্তন। ডারউইনবাদীদের বিশ্বাস অনুযায়ী পরিবেশ ও জীনগত পরিবর্তনের কারণে এককোষী একটি জীব থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে জটিল সব জীব-জন্তু ও উদ্ভিদ বিবর্তিত হয়েছে। অর্থাৎ সরল জীবের দেহে ধীরে ধীরে নতুন নতুন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ‘সংযোজিত’ হয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন প্রকারের জটিল জীব-জন্তুর উদ্ভব হয়েছে। বিবর্তন তত্ত্ব সত্য হলে তা কিন্তু হতেই হবে। তাদের এই বিশ্বাস যে কতটা হাস্যকর আর অবাস্তব – তার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা দিতে গেলে বিশাল এক বিশ্বকোষ হয়ে যাবে। তথাপি বেশ কিছু উদাহরণের সাহায্যে এই ধরণের বিশ্বাসের অসারতা তুলে ধরা হবে।

বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী যে অণুজীব থেকে বিবর্তন শুরু হওয়ার কথা বলা হয় সেই জীবের মাথা, ব্রেন, চুল, কান, নাক, চোখ, মুখ, জিহ্বা, হাত, পা, নখ, শিং, লেজ, পরিপাকতন্ত্র, প্রজননতন্ত্র, ও হৃৎপিণ্ড সহ কিছুই ছিল না। অথচ প্রকৃতিতে শিং-বিহীন ও শিং-ওয়ালা উভয় প্রাণীই দেখা যায়। প্রকৃতিতে যেহেতু শিং-বিহীন ও শিং-ওয়ালা উভয় প্রাণীই আছে, এবং বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী এগুলোর উৎস যেহেতু এক, সেহেতু বিবর্তনের কোন এক পর্যায়ে শিং-বিহীন প্রাণী থেকে শিং-ওয়ালা প্রাণী বিবর্তিত হতেই হবে। অন্যথায় বিবর্তন তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হবে। প্রশ্ন হচ্ছে কেন ও কীভাবে শিং-বিহীন প্রজাতির মাথায় ধীরে ধীরে শিং গজালো। কেন ও কীভাবে লেজ-বিহীন প্রজাতির পেছনে ধীরে ধীরে লেজ গজালো, আর কেন ও কীভাবেই বা আবার সেই লেজ ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে গেল! বাস্তবে আদৌ কি তা সম্ভব? নিচের ছবিগুলো লক্ষ্য করুন।

শিং-বিহীন, শিং-ওয়ালা, লেজ-বিহীন, ও লেজ-ওয়ালা কিছু প্রাণী









এবার একটু যৌক্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভেবে দেখুন। এককোষী একটি জীব থেকে ধীরে ধীরে বিবর্তিত হতে হতে একদিন হঠাৎ করে শিং আর লেজ গজানো শুরু করছে! এমনকি শতভাগ ক্ষেত্রে ঠিক মাথার উপরে শিং আর পেছনের দিকে লেজ গজিয়েছে, শরীরের অন্য কোন অংশে নয়! শিং ও লেজ বিহীন প্রজাতির দেহে শিং ও লেজ গজাতে হলে কিন্তু নতুন তথ্য লাগবে। সেই নতুন তথ্য কোথা থেকে আসবে? এভাবে বিবর্তিত হতে হতে ডারউইনবাদীদের মতো শিং ও লেজ বিহীন মানুষে এসে ঠেকেছে! লেজ আর শিং এক সাথে গজিয়ে আবার এক সাথে বিলুপ্ত হয়েছে কিনা কে জানে!

বাস্তবতা হচ্ছে শিং ও লেজ বিহীন প্রাণী থেকে ধীরে ধীরে শিং ও লেজ ওয়ালা প্রাণী বিবর্তিত হওয়ার পক্ষে কোন প্রমাণ নাই। বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ও সাধারণ বোধ অনুযায়ী শিং ও লেজ বিহীন প্রাণীকে আলাদাভাবে হাজার হাজার বছর ধরে রেখে দিলেও তাদের দেহে একদিন শিং ও লেজ গজানো শুরু করবে না। ডারউইনবাদীরা যদি মনে করেন তা সম্ভব তাহলে প্রমাণ করে দেখাতে হবে। তাছাড়া শুধু শিং ও লেজ গজালেই কিন্তু হবে না, সেই সাথে ধীরে ধীরে ভিন্ন প্রজাতিতে রূপান্তরিতও হতে হবে!

উপসংহার: শিং-বিহীন প্রাণী থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিং-ওয়ালা প্রাণী বিবর্তিত হওয়ার পক্ষে যেহেতু কোন প্রমাণ নাই এবং বাস্তবেও এমন বিবর্তন সম্ভব নয় সেহেতু শিং-বিহীন ও শিং-ওয়ালা প্রাণীর আলাদা আলাদা উৎস থাকতে হবে। আর আলাদা আলাদা উৎস থাকতে হলে বিবর্তন তত্ত্বের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে যায়। লেজ-বিহীন ও লেজ-ওয়ালা প্রাণীর ক্ষেত্রেও একই যুক্তি প্রযোজ্য।

Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger