গবেষকদের কপালে ঘাম জমানো পৃথিবীর মহারহস্যময় কিছু জায়গা

|
দুনিয়াতে রহস্যের শেষ নেই।সুদূর প্রাচীনযুগ থেকেই রহস্য পৃথিবীর মানুষকে করেছে রোমাঞ্চিত,ভিত,উৎসাহী।আর তাদের মধ্যে যারা গবেষণার অ্যাডভেঞ্চারে নেমে পড়েছে এসব রহস্যভেদে তারা এখনও এসব রহস্যের পেছনের কথা বের করতে পারেন নি।আবার কিছু ক্ষেত্রে আংশিক পারলেও পরিপূর্ণ তৃপ্তি আসেনি কখনও।এমনই কিছু রহস্যময় জায়গার কথন আজকের এই পোস্ট।

১।মমির অভিশাপ:

এটা নিশ্চিত যে ফারাও রাজাদের মমি তৈরী করে পিরামিডে রাখা হত এবং অনেক রহস্যই আজ উন্মোচনের পথে,কিন্তু পিরামিডের নির্মাণশৈলী,নির্মাণের তারিখ এবং সম্ভাব্য প্রতীকগুলোর ব্যাপারে এখনও বোঝা সম্ভব হয়নি।এই রহস্যটি কেবল এই প্রাচীন বিস্ময়গুলির আকর্ষণে
নয় সেই সাথে অনেক আধুনিক মানুষই এসব পিরামিডকে আধ্যাত্মিক জায়গা হিসেবে স্বীকার করেছেন।এগুলো হল সেই পিরামিড যা নিয়ে খোড়াখুড়ি করা গবেষক,নিরাপত্তা পর্যবেক্ষকের অনেকেই কেউ দুর্ঘটনায়,কেউ অনারোগ্য কঠিন রোগ,কেউবা খুন হয়ে এমনকি আত্মহত্যা করে,কেউ হার্ট এ্যাটাকে মারা গিয়েছেন।এককথায় অস্বাভাবিক মৃত্যু কেড়ে নিয়েছে তাঁদের জীবন।কথিত আছে কোন ব্যাক্তি তুতেনখামুনের মৃত্যুর পর সেই আমলে সিল করে দেওয়া তাঁর মমির ঘরটি খুললেই সে ব্যাক্তি বিভিন্ন ধরণের সমস্যায় জর্জরিত হবে যার ফলে তার মৃত্যুও ঘটতে পারে।




১৯২৩ সালের মার্চের শেষনাগাদ নোবেলজয়ী ম্যারি করেলি(ম্যারি ম্যাককেই)একটি সতর্কবার্তা প্রকাশ করেন যে সিল করে দেওয়া তুতেনখামুনের লাশঘরটিরতে প্রবেশ করলে বিপদজনক কিছু ঘটতে পারে।
ধারণা করা হয় ম্যারি এই বার্তাটি প্রকাশ করেন এই খবরটি থেকে প্রভাবিত হয়ে যে,যেদিন হাওয়ার্ড কার্টার নিষিদ্ধ মমির ঘরটি খোলেন,সেদিন তাঁর আদরের পোষ্য ক্যানেরিকে একটি গোখড়া গিলে খেয়ে নেয়।উল্লেখ্য,তখনকার দেবী গোখড়াসাপ তুতেনখামুনের মমির রক্ষক।



এই সেই রহস্যময় তুতেনখামুনের মমির ঘর

এমনই একজন হলেন লর্ড কারনারভন

লর্ড কারনারভন

১৯২২ সালের নভেম্বরে হাওয়ার্ড কার্টার তুতেনখামুনেরমমি আবিষ্কার করেন।লর্ড কারনারভন সেই অভিযানে অর্থ বিনিয়োগ করেন।আগে থেকেই তিনি একটি মোটর দুর্ঘটনায় ২০ বছর অসুস্হ থাকেন।তবে এই অর্থ বিনিয়োগের পর ৫ই এপ্রিল,১৯২৩ সালে তিনি কায়রোতে মৃত্যুবরণ করেন।একই সময়ে ইংল্যান্ডেও তাঁর কুকুর সুসি গর্জন করতে করতে মৃত্যুবরণ করে।ঠিক তার কয়েক সপ্তাহ আগেই ম্যারি করেলি সেই সতর্কবার্তা প্রকাশ করেন।এই ঘটনার পর দুনিয়ার মিডিয়াজগতে বিস্ময়ের আবহাওয়া ছেয়ে যায়(তখনকার মিডিয়া বলতে ছিল শুধুমাত্রই পত্রিকা এবং যোগাযোগ ব্যবস্হা ছিল খুবই ধীরগতির)।যদিও অনেকের কাছে কুসংস্কার,কিন্তু তখনকার সময়ে মমির অভিশাপের কথা জনমনে আরও বেশী গেঁথে যায় যখন জনপ্রিয় শার্লোখ হোমসের স্রষ্টা কোনান ডয়লে ঘোষণা করেন যে লর্ড কারনারভানের মৃত্যু মমির অভিশাপের কারণেই হতে পারে।
তখনকার একটি পত্রিকা দাবী করে বসে যে তারা সেই মমিঘরে একটি অভিশাপপত্র আবিষ্কার করে যেখানে লেখা আছে,

"They who enter this sacred tomb shall swift be visited by wings of death."

এই ধরণের আরও কিছু সতর্কবার্তা আবিষ্কার হয় এই ঘর থেকে যা নিম্নরূপ:
"It is I who hinder the sand from choking the secret chamber. I am for the protection of the deceased".

একজন রিপোর্টারের ভাষায়,"and I will kill all those who cross this threshold into the sacred precincts of the Royal King who lives forever."

পরবর্তী সময়ে ২৬ জন মানুষ এই তুতেনখামুনের মমি নিয়ে গবেষণা ও খোড়াখুড়ি শুরু করার কিছু সময়ের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে।

তুতেনখামুনের মূর্তি

২।নরকের দরজা(Door to Hell):

তুর্কেমেনিস্তানের ডারভেজ শহরে অবস্হিত এটি একটি জ্বলন্ত গর্ত। জ্বলন্ত জায়গাটি Door to Hell নামে সুপরিচিত। ১৯৭১ সাল থেকে জায়গাটি অবিরত দাউ দাউ করে জ্বলছে। ১৯৭১ সালে এখানে গ্যাস খনির সন্ধান মেলে। প্রাথমিকভাবে গবেষনা করে বিষাক্ত গ্যাসের ব্যাপারে গবেষকরা নিশ্চিত হন যার পরিমান ছিল সীমিত। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, এই গ্যাস জ্বালিয়ে শেষ করা হবে ফলে এর বিষাক্ততা ছড়ানোর সুযোগ পাবে না। এরপর এখানে গর্ত করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু গবেষকদের অবাক করে দিয়ে তা এখনও অর্থাৎ ৪০ বছর ধরে একাধারে জ্বলছে। অথচ গবেষকরা নিশ্চিত ছিলেন যে, অল্প কয়েকদিন মধ্যে এই গ্যাস শেষ হবে এবং আগুন নিভে যাবে।






৩।ফুটন্ত কাদামাটি(বয়েলিং মাড)

নিউজিল্যান্ডের Rotorua য় অবস্হিত Taupo লেকে ফুটন্ত কাঁদা-মাটি দেখতে পাওয়া যায়। গবেষকদের ধারনা মতে, নদী ও লেকের পানি নির্দিষ্ট এই জায়গার উত্তপ্ত পাথরের উপরে প্রবাহিত হয় বলে এই অবস্হার সৃষ্টি হয়েছে। তাই ব্যতিক্রমধর্মী এই জায়গাটি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষন।



৪।ডন জুয়ান পুকুর:

জায়গাটি এ্যান্টার্কটিকায় অবস্হিত।অত্যন্ত লবণাক্ত পানির কারনে জায়গাটি রহস্য সৃষ্টি করেছে।১৯৬১ সালে জায়গাটি আবিস্কৃত হয়।এই পুকুরের পানি সমুদ্রের পানি থেকে ১৮ গুন বেশী লবনাক্ত।পুকুরটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৩০০ ফুট, প্রস্হ ১০০ ফুট এবং গভীরতা .১০ মিটার।এই জায়গার তাপমাত্রা -৩০ ডিগ্রী কমে গেলেও অতি লবনাক্তার জন্য এই পুকুরের পানি কখনও সম্পূর্ন জমে যায় না।




৫।ড্যাথ ভ্যালি:

Death Valley উপত্যকার Racetrack Playa অংশটি জনমানবহীন এক বৈচিত্রময় জায়গা।সচরাচর অন্য প্রানীও দেখা যায় না এখানে। এই উপত্যকার রহস্যময় পাথরগুলি কোন এক অজানা কারনে তার স্হান পরিবর্তন করে বয়ে চলে।বছরের পর বছর ধরে এই পাথর নিজেরায় কিভাবে যেন চলছে সরল পথ ধরে।ধারনা করা হয় যে,পাথরগুলি প্রতি ২-৩ বছর পর পর অগ্রসর হয়।পাথরগুলো নিয়ে এখনও ব্যাপক গবেষনা চলছে।রহস্য আরও ঘনিভূত হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে,

• বিস্তৃত এলাকা জনমানবহীন।
• এখানে বন্যা হয় না।
• এখানে এতো গতিবেগে বাতাস প্রবাহিত হয় না যে পাথরগুলির স্হান পরিবর্তনে সহায়ক হবে।

কিছু গবেষকদের মতে, মাটি যখন কর্দমাক্ত থাকে এবং বরফ পড়ে পিচ্ছিল হয় তখন বাতাসের ধাক্কায় পাথরগুলি স্হান পরিবর্তন করতে পারে। শেষ পর্যন্ত এই যুক্তিও গ্রহণযোগ্যতা পাইনি। কারন পাথরগুলি স্হান পরিবর্তন করে গ্রীষ্মকালে যখন মাটি একেবারে শুকনো থাকে এবং বরফও পড়ে না। তাছাড়া পাথরগুলি একই রাস্তায় চলে না। প্রতিটি পাথরের চলার পথ সম্পূর্ন ভিন্ন বা আলাদা।

যদিও এর পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে তারপরও এই পাথরের স্হান পরিবর্তনের ব্যাপারটা বরাবরই রহস্যময়।




৬।সকর্টা(Socotra):

ভারত মহাসাগরের সবচেয়ে বড় দ্বীপটি হচ্ছে সকর্টা। ৪৮০০ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপটি ইয়েমেনের অন্তর্ভুক্ত। অত্যন্ত ব্যতিক্রমধর্মী দ্বীপটি -
পাথর, গাছপালা, এমন কি এখানকার জীবজন্তুও কেমন অদ্ভুত প্রজাতির। তাইতো এই দ্বীপকে The Most Alien-Looking Place on Earth বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্রময় জায়গার মধ্যে এটি অন্যতম।







৭।ব্রিটেনের স্টোনহেন্জ:

ব্রিটেনের উইল্টশায়ারে অবস্হিত দৈত্যাকৃতির এই পাথরখন্ডগুলো পৃথিবীর অন্যতম মহারহস্য কেননা এখনও কোন গবেষক প্রমাণ করা তো দূরের কথা এখনও কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন নি যে কে বা কারা এবং কি উদ্দেশ্যে পাথরগুলোকে এখানে এনে এভাবে সাজিয়েছে।তবে তাঁরা নির্ণয় করতে পেরেছেন যে খ্রীস্টের জন্মের ২৫০০ বছর আগে পাথরগুলো এখানে তৈরী হয়েছিল বা বাইরে থেকে আনা হয়েছিল।



৮।ইস্টার আইল্যান্ডের(চিলি) মোয়াই:

চিলির ইস্টার আইল্যান্ডের মোয়াই নামের কতগুলো মূর্তি।এগুলো পৃথিবীর অন্যতম রহস্য।মোয়াই হচ্ছে রাপা নুই দ্বীপে (ইস্টার আইল্যান্ড Easter Island),সংকুচিত আগ্নেয় শিলায় খোদাইকৃত অনেকগুলো আবক্ষ মূর্তি। প্রত্যেকটি মূর্তি একেকটি আস্ত শিলা হতে খোদাই করা হয়েছে, প্রত্যেকটি মূর্তির ওজন ২০ টন এবং উচ্চতা ২০ ফুট।অবশ্য একটি অসম্পূর্ণ মূর্তি পাওয়া গেছে যার উচ্চতা ৬৯ ফুট ও ওজন ২৭০ টন।এ পর্যন্ত ৮৮৭টি মোয়াই সম্পর্কে জানা গেছে, কিন্তু বর্তমানে ৩৯৪ টি মোয়াই দেখা যায়।

মোয়াই মূর্তি

দ্বীপের জ্যামিতিক অবস্হান
মোয়াই ব্যাপারটি একারণে রহস্যময় যে গবেষকরা এখনও বুঝতে পারেন নি কিভাবে এত বড় বড় মুর্তি এই জনসংযোগ বিহিন দ্বীপটি তে এলো। যদি স্থানীয় লোকেরাই তৈরি করে থাকে তাহলে কি এমন হয়েছিল যে স্থানীয় লোকজন এমন ভাবে এত গুলো মুর্তি তৈরি করেছিল।সর্বপ্রথম ক্যাপ্টেন রগেভিনের নেতৃত্বাধীন একটি ওলন্দাজ অভিযাত্রী দল যে কোন এক ইস্টারসানডের দিন সর্বপ্রথম মূর্তিগুলো আবিষ্কার করেন।অভিযাত্রী দল তথ্য নিয়ে জানতে পারলেন-দ্বীপের মানুষেরা এই মূর্তিগুলো গড়েনি। তারা জানেও না, কেবা কারা এই মূর্তিগুলো গড়েছিলো।তবে এই মূর্তিগুলোকে দেবতা মনে করে দ্বীপবাসীরা নিয়মিত পুজো দেয়।তাই কৌতুহল বশেই ক্যাপ্টেন রগেভিন এই দ্বীপের নামকরণ করলেন ইস্টার আইল্যান্ড।নিজের জার্নালে তিনি ইস্টার আইল্যান্ডের এক অদ্ভুত দৃশ্যের কথা লেখেন।তা হল-বিস্ময়কর রকমের বড় পাথরগুলো উপকূল বরাবর দাঁড় করানো ছিল।

ক্যাপ্টেন রগেভিন


এ বিষয়টি নিয়ে অভিযাত্রী দলের সকলেই অবাক হলেন। এরপর ধীরে ধীরে সারা পৃথিবীতে এই রহস্যের কথা ছড়িয়ে পড়লো। ইস্টার আইল্যান্ড নিয়ে শুরু হল গবেষণা।বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্ব থর হেয়ারডালপ্রচুর গবেষণা ও খনন কার্যের পর তথ্য দিলেন ৩৮০ খৃষ্টাব্দে পেরু থেকে কিছু মানুষ এসে এই দ্বীপে বসবাস শুরু করেন।তারা তৈরী করেছিলো রাস্তা, মন্দির, মানমন্দির ও সুরঙ্গ পথ। ১২৮০ খৃষ্টাব্দে পেরু থেকেই অন্য লোকজন এসে দ্বীপটি দখল করে নেন। ধারণা করা হয়, তারাই এই মূর্তিগুলো গড়েন। মূর্তিগুলোর কান লম্বা। কারণ পেরুবাসীদের মধ্যে কানে ভারি দুল পরে কান লম্বা করার রেওয়াজ ছিল।এর প্রায় চারশত বছর পর ১৬৮০ সালে পলি নেশীয়রা এশিয়ার দিক থেকে এসে দ্বীপটি অধিকার করে এবং সে সময় মূর্তি তৈরি প্রচলন লোপ পায়।

থর হেয়ারডাল

রেডিও কার্বন পরীক্ষার সাহায্যে থর হেয়ারডাল এসব তথ্য পৌঁছালেও বহু গবেষক এর বিরোধিতা করেন। তাঁদের মতে, দ্বীপ সংলগ্ন আগ্নেয়গিরি থেকে বিরাট গাছের গুঁড়ির সাহায্যে পাথর গড়িয়ে এনে এই মূর্তিগুলো গড়া হয়েছে।
তাঁদের এই মতের অমিলের ফলেই মোয়াই নিয়ে রহস্যের শেষ নাই আজও।

৯।বালবেক(লেবানন):

লেবাননের রাজধানী বৈরুত।বৈরুত থেকে ৩৯ মাইল দূরে বালবেক নামে একটি গ্রিক মন্দিরের (জুপিটারের) ধ্বংসাবশেষ পুরনো দিনের বৃহত্তম গ্রিক ঐতিহ্যের সাক্ষ্য দেয়। এখানে একেকটি পাথরের ওজন ৭৫০ টনের মতো। সেই আদি যুগে যখন ক্রেন, গাড়ি, লোহার যন্ত্রাদি কিছুই ছিল না তখন খনি থেকে পাথর উঠিয়ে তার ওপর নানাবিধ কাজ করে উঁচুতে যথাস্থানে তাদের তোলা হয়েছিল।আর এভাবেই জুপিটারের মন্দির হয়েছিল,যা অতি বিস্ময়কর জিনিস।



১০।মাচুপিচু(পেরু):

নেটিভ আমেরিকানদের ইনকা সভ্যতা এক রহস্যময় সাম্রাজ্য যাদের সম্পর্কে এখনও কোন সঠিক তথ্য বের করা সম্ভব হয়নি।বিধ্বংসী স্প্যানিশ অভিযাত্রীরা বারবার আঘাত হেনেছিল ইনকাদের প্রাচুর্যে।লুটপাট,হত্যাসহ আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে ইনকা সভ্যতার সমৃদ্ধ শহরগুলো।মূলত সেই ধ্বংসযজ্ঞের কারণে ইনকা সম্পর্কে খুব অল্পই তথ্য-প্রমাণ মিলেছে।তবে নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে এ সভ্যতা সম্পর্কে অনুমান করা হয়।ইনকা সাম্রাজ্য 'কেচুয়া' নামক নেটিভ আমেরিকানদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত প্রায় ৩০০ বছর ধরে রাজত্ব করে গেছে।কেচুয়া জাতির শাসকদের মর্যাদা দেবতাতুল্য বলে তাদের ইনকা বলা হতো।সূর্যদেবকে তারা ইনতি বলে ডাকত এবং সেই নামের প্রতিনিধিত্ব করত ইনকা শাসকরা।


ইনকাদের নির্মাণশৈলী খুবই নিখুঁত এবং সাদামাঠা। মিসরীয় ফারাউনদের মতো তাদের সম্রাটরাও ডামিগড মর্যাদার অধিকারী ছিল।স্প্যানিশ দখলদারদের আক্রমণে ১৫৩২ সালে ক্ষমতাধর ইনকা সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায় এবং অনেক পরে তাদের ধ্বংসস্তূপ থেকে ইতিহাসের পাতায় তুলে আনেন একজন উত্তর আমেরিকান গবেষক এবং সিনেটর হাইরাম বিংগাম।

হাইরাম বিংগাম
১৯১১ সালে হাইরাম বিংগাম তার ব্যক্তিগত ভ্রমণ অনুসন্ধিৎসা থেকে চলতে চলতে মাচুপিচু দুর্গনগরী, ইনকাদের শেষ আশ্চর্য নিদর্শন আবিষ্কার করেন। যখন তিনি প্রথম সে জায়গাটি খুঁজে পান তখন তিনি অনুমান করতে পারেননি, তিনি একটি মূল্যবান প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু তার সহজাত অনুসন্ধিৎসা তাকে আবার সেখানে ফিরে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীকালে পেশাদার প্রত্নতাত্ত্বিকদের সহায়তায় তিনি হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের এই সভ্যতাকে আবিষ্কার করেন।

১৫২৭ সালে ইনকা সাম্রাজ্যে এক মহামারী দেখা দেয়। সেই মহামারিতে ইনকা রাজা ও তার উত্তরসূরি ছেলে মারা যান। রাজার অন্য দুই ছেলের মধ্যে সিংহাসনের লড়াইয়ে দেশজুড়ে রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এদের একজন অ্যাটাহুয়ালপা জিতে গেলেও খুব বেশি দিন টিকতে পারেননি। ১৫৩২ সালে স্প্যানিশ যোদ্ধা ফ্রান্সিস পিজারো তাকে হারিয়ে দেন।পিজারো নামমাত্র রাজা হিসেবে সিংহাসনে বসান অ্যাটাহুয়ালপার শত্রু মানকোকে। নতুন রাজা অবশ্য কখনোই রাজার সম্মান পাননি।তাই প্রতিহিংসায় মেতে উঠে মানকো।ইনকা রাজার সোনার মূর্তি এনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ভিলকাবাম্বা শহরের পাহাড়ে হারিয়ে যান মানকো ও তার শক্তিশালী সেনারা।এরপর বহু বছর ধরে মানকো ও তার ছেলেদের সঙ্গে ইনকা সভ্যতার সিংহাসন জয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে স্প্যানিশ যোদ্ধাদের।এর মধ্যে কারও পক্ষেই আর সেই ভিলকাবাম্বা কিংবা ভিটেকাস নামের শহর দুইটিকে গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব হয়নি।

অ্যাটাহুয়ালপা ও ফ্রান্সিস পিজারোর যুদ্ধ


মানকো
স্প্যানিশ কলোনির মানচিত্রেও শহর দুইটির উল্লেখ নেই। কিন্তু এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে ইনকা সভ্যতার বিশাল রত্নভাণ্ডার। ইনকাদের শেষ রাজা এ শহরেই পুঁতে রেখেছেন অমূল্য ধনসম্পদ। ইনকাদের ধন-সম্পদের আশায় বহু প্রত্নতাত্তি্বক বছরের পর বছর অনুসন্ধান করে গেছেন নিরলসভাবে।
ধারণা করা হয়, আপুরিমাক নদীর অববাহিকায় চোককেকিরোই প্রাচীন ভিলকাবাম্বা শহরটি।এ ধারণা নিয়ে আমেরিকান বিশেষজ্ঞ বিংহাম গুপ্তধনের অনুসন্ধান শুরু করেন ১৯০৯ সালে।


১১।নাজকা রেখা(পেরু):

পেরুর নাজকা মরুভূমিতে যদি একটি বিমান নিয়ে উড়ে যাওয়া যায়, তাহলে একটি স্থানে বিস্ময়ের সাথে সবার চোখ আটকে যায়। ককপিট থেকে দেখা যাবে মরুভূমির বুকে আঁকা অসংখ্য আকিবুকি, জ্যামিতিক নকশা আর পশু-পাখির ডিজাইন।

১৯৩০ এর দশকে সর্বপ্রথম বিমানযোগে ঐ মরভূমি পার হবার সময় এ লাইনগুলো আবিস্কৃত হয়। এরপর থেকে এ নিয়ে চিন্তা ও গবেষণার শেষ নেই। গবেষকরা ধারণা করেন, নাজকা জাতির লোকেরা কাঠ ও ঐ ধরণের সরঞ্জামাদি দিয়ে এ রেখাগুলো এঁকেছে। অনেকগুলো রেখারই শেষপ্রান্তে কিছু শিলীভূত কাঠের উপকরণ পাওয়া গিয়েছে, যা থেকে কার্বন টেস্টের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ঐ রেখা আঁকার সময়কাল বের করেছেন।

তবে এ রেখাগুলো কি কারণে আঁকা হয়েছিল, তা নিয়ে গবেষণা শেষ হয়নি। বিখ্যাত পুরাতত্ববিদ এরিক ফন দানিকেনের মতে, নাজকা লাইনগুলো মূলত ভিনগ্রহের আগন্তুকদের ব্যবহার করা এয়ারস্পেস ও সিগন্যাল সেন্টার হিসেবে কাজ করত। তার ধারণা মতে, ভিনগ্রহের এ আগন্তুকদেরই তখনকার মানুষেরা স্বর্গ থেকে নেমে আসা দেবদূত ভেবেছিল এবং দেবতা হিসেবে তাদের পূজা করেছিল। তবে বেশির ভাগ গবেষকই এ মতের সাথে ভিন্নতা প্রকাশ করেন।অনেকে মনে করেন, নাজকা ইন্ডিয়ানরা তাদের উপাস্য দেবতাদের খুশী করবার জন্য এ ধরণের বিশালাকৃতির রেখাচিত্র এঁকেছিল, যাতে দেবতারা স্বর্গ থেকেও তা দেখতে পান। আবার কেউ কেউ মনে করেন,জ্যোতির্বিদ্যা এবং নক্ষত্র পর্যবেক্ষনের কাজে এ রেখাগুলো আঁকা হয়েছিল।আকাশের অরায়ন তারকামন্ডলীর সাথে নাজকাদের আঁকা বৃহত্তর মাকড়শার একটি নকশার আশ্চর্যরকম সাজুয্য আছে বলে কোন কোন গবেষক দাবী করেন।


আবার কারো মত হল ঐ রেখাগুলো ছিল নাজকা ইন্ডিয়ানদের উপসনার একটি অংশ। তবে এ সম্পর্কে কোন মতৈক্যে পৌছানো না গেলেও এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই মানব সভ্যতার বিকাশের ইতিহাসে এ এক অসামান্য উপকরণ।কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি ছাড়া শুধুমাত্র মানবিক প্রচেষ্টায় এমন নকশা তৈরী করা,যা একমাত্র বিমান থেকে বা স্যাটেলাইট থেকেই নিখুত হয়েছে কি না তা বোঝা যায়,মানুষের সেই মেধারই পরিচয় তুলে ধরে।

একটি জিজ্ঞাসা সকলের মনেই আসে,তা হল খ্রিষ্টপূর্ব যুগের এই অগভীর পাতলা রেখাগুলো এ কয়েক হাজার বছর পরেও এত নিখুঁত আর অক্ষত আছে কিভাবে? এর উত্তর পেরুর ঐ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতির মাঝেই লুকিয়ে আছে।নাজকা মরুভূমি বৃষ্টিশূন্য একটি এলাকা, বায়ুপ্রবাহও খুব কম।সারা বছরই সেখানকার তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সে. এর আশে পাশে থাকে।এ কারণেই হয়তো আজও অক্ষত থেকে আমাদের বিস্ময়ের যোগান দিয়ে চলেছে এই নাজকা লাইনস।তবে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে সেখানেও।২০০৭ এর ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝিতে ব্যাপক বন্যা আর ভূমিধ্বসের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ঐ অঞ্চলটি।ইউনেস্কো ১৯৯৪ সালে পেরুর এই নাজকা লাইনসকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছে।সারা বিশ্বের অসংখ্য পর্যটক আজও আসেন এ বিস্ময়কীর্তি দেখবার জন্য।


১২।টিয়াহুয়ানাকু(বলিভিয়া):

বলিভিয়ার টিয়াহুয়ানাকু(টিউয়ানাকু নামেও পরিচিত) জায়গাটি রহস্যময় কারণ এর অতিপ্রাচীনতা।হিসাব করে দেখা গেছে এর বয়স সতেরো হাজার বছর।যখন হিন্দু ধর্মের অবতার কৃষ্ঞ এবং খ্রীস্টান,ইসলাম ও ইহুদীদের নবী ইব্রাহিমের আগমন ঘটেনি।এছাড়াও এর পাথুরে প্রযুক্তিও বিস্ময় জাগানিয়া।

যেহেতু অতিপ্রাচীন এবং কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে বয়স নির্ধারিত তাই এর পেছনের প্রায় সব কথায়ই রহস্যময়।ধারণা করা হয় যে টিয়াহুয়ানাকু এক ধরণের প্রাচীন সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দু ছিল যে সংস্কৃতি ঐ অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে গিয়েছিল।



১৩।চিচেন ইটজা(মেক্সিকো):

মায়ান সভ্যতার একটি অংশ হল চিচেন ইটজা।মায়ান সভ্যতার কথা কে না জানে।তারা জংগল কেটে কেটে আধুনিক শহর তৈরী করেছিলো,পাথর দিয়ে বানানো বল দিয়ে এক অদ্ভুদ খেলা খেলত যা তাদের বেঁচে থাকা বা মারা যাওয়া নির্ধারন করতো।তারা তাদের রক্ত বিসর্জন দিতো নিজেদের মঙ্গলকামনায়,তারা জীবন সাজাতো কল্পিত স্বর্গকে অনুসরন করে।তাদের লেখাগুলো ছিলো এক রহস্যময় পাজল যা মানুষ এখনো বুঝতে পারেনি।শেষ পর্যন্ত মানুষ জানতে পারলো কারা ছিলো তারা।তারা ছিলো সেই সব মানুষ যারা মনে করতো ঈশ্বর তাদের শষ্যদানা থেকে সৃষ্টি করেছে।আমেরিকান পর্যটক নাম জন লয়েড ষ্টিফেন এক নৌ অভিযাত্রায় এসে মায়া সভ্যতা খুঁজে পান যার নাম কোপান।তখন পর্যন্ত মায়া সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানা ছিলোনা।



ষ্টিফেন এবং এক ইংরেজ চিত্রকর ফ্রেডরিক উত্তরখন্ডে মায়ার আরো একটি শহরের খোঁজ পান,নাম ইয়োকাটান।ইয়োকাটানে তারা উক্সমাল এবং চিচেন ইটজা ঘুরে দেখেন।


মায়ানদের হাতে তৈরী চিচেন ইটজা শহর একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্বিক স্হাপণা।এখানকার এল ক্যাস্টিলো মন্দির এবং যোদ্ধাদের মন্দিরের উপর উপবেষ্টিত দেবতা ক্যাকমূলের(বৃষ্টির দেবতা)প্রতিকৃতি যাকে মায়ান সন্যাসীরা সে যুগে স্হাপণ করেছিলেন।বলা হয়ে থাকে যে দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত বুক ছিড়ে নিয়ে আসা হার্টসমূহ এখনও দুপদুপ করছে।ইটজার অধিবাসীদের গোরাপত্তনের কাহিনী এখনও পৃথিবীর মানুষের কাছে অনাবিষ্কৃত।

১৪।কোস্টারিকার গোলাকৃতির পাথর:

কোস্টারিকার ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে পাওয়া গেছে কিছু রহস্যময় পাথর।ক্রিকেট বলাকৃতির এই পাথরের ব্যাস প্রায় ৮ ফুট আর সেখানে আছে এমনই ব্যাসের শতাধিক পাথর।এই পাথরগুলোর কোনো কোনোটির ওজন কত জানেন?১৬ টন পর্যন্ত! এগুলো পাওয়া গিয়েছিল ১৯৩০ সালের দিকে।মসৃণ-গোলাকার এই পাথরগুলো দেখলে বোঝা যায়, এগুলো এক সময় মানুষ নিজ হাতে তৈরি করেছে।কেউ কেউ অবশ্য দাবি করছেন,এসব পাথর ভিনগ্রহের বাসিন্দরা এখানে এনেছে।গোলাকার এ পাথরগুলো আসলে কে বা কারা ওখানে নিয়ে এসেছিল, তা আজ পর্যন্ত রহস্যই থেকে গেল।



১৫।বারমুডা ট্রায়াংগ্যাল:

অনেক আগ থেকেই পৃথিবীর রহস্যময় কোন স্থান বললেই আমাদের মনে যে নামটি ভেসে উঠত সেটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। যেখানে কম্পাস কাজ করে না,কোন জাহাজ গেলে তা আর ফিরে আসে না,ওপর দিয়ে বিমান উড়ে গেলে সেটিকে আর খুজে পাওয়া যায় না।কিন্তু সত্যি সত্যিই কি এ ধরণের কোন স্থান পৃথিবীতে আছে ?


সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আমাদের সামনে আসে,তা হল,এই কথিত বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আসলে কোথায়?মূলত আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যাংশের পশ্চিম প্রান্তে সাগরের একটি অংশকেই অভিশপ্ত ট্রায়াংগ্যাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।আরও স্পষ্টভাবে,আমেরিকার ফ্লোরিডা,বাহামা এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জকে সীমানা ধরে অঙ্কিত একটি কাল্পনিক ত্রিভূজাকার জলসীমাকেই বারমুডা ট্রায়ঙ্গল নামে অভিহিত করা হয়।এর মধ্যে একটি দ্বীপরাষ্ট্র রয়েছে,বারমুডা এই দ্বীপের নামেই জলভাগটির নামকরণ করা হয়।

মূলত ১৯৫০ সালে সংবাদ সংস্থা এপি প্রকাশিত একটি নিবন্ধে সর্বপ্রথম বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে রহস্যময় জাহাজ অন্তর্ধান হবার সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৫২ সালে ফেইট ম্যাগাজিনে মার্কিন বিমান বাহিনীর ফ্লাইট-১৯ বিমান বহরের পাঁচটি বিমান একসঙ্গে নিখোঁজ হবার সংবাদ প্রচার করা হয়।এরপর থেকে আমেরিকার বিভিন্ন ম্যাগাজিনে বারমুডা ট্রায়াংগ্যাল সম্পর্কিত নানান ঘটনা প্রকাশিত হওয়া শুরু করে।১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে বেশ কিছু বইও বাজারে চলে আসে বারমুডা ট্রায়াংগ্যালে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনাবলী নিয়ে।এক পর্যায়ে এটি বিশ্বের সর্বত্র পরিচিত একটি রহস্যপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়।সঙ্গত কারণেই বিজ্ঞানীরা গবেষণা শুরু করেন এবং এর ফলে জবাব মিলে যায় সকল জিজ্ঞাসার, মিটে যায় প্রায় কিংবদন্তীতে পরিণত হওয়া বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য।

সর্বপ্রথম ১৯৪৫ সালের ফ্লাইট-১৯ নিখোঁজ হবার ঘটনার মধ্য দিয়েই সামনে আসে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য।এরপর ১৯৪৮ সালে ৩২ জন যাত্রী নিয়ে একটি ডিসি-৩ ডাকোটা বিমান নিখোজ হয় এখানে।১৯৬৩ সালে মার্কিন বিমান বাহিনীর দু’টি কেসি-১৩৫ জঙ্গী বিমান মুখোমুখি সংঘর্ষে ধ্বংস হয়ে যায়।জাহাজের ক্ষেত্রে ইতিহাস আরও পুরোনো।১৮১২ সালে আমেরিকার সাউথ ক্যারোলিনা থেকে নিউইয়র্ক যাবার পথে ‘প্যাট্রিয়ট’ নামের একটি জাহাজ এখানে নিখোঁজ হয়, যাতে একজন যাত্রী ছিলেন থিউডোসিয়া, তৎকালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাস্টন বার এর কন্যা।এছাড়াও ১৮৭২ সালে মেরী সেলেস নামে একটি বিখ্যাত জাহাজ, ১৮৮১ সালে নিউইয়র্কগামী ইলেন অস্টিন নামের আরেকটি জাহাজ এবং অন্যান্য আরও কিছূ জাহাজডুবির ঘটনায় প্রসিদ্ধ হয়ে পড়ে এই বারমুডা ট্রায়াংগ্যাল।

Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger