খনিজের খোঁজ এবার পৃথিবীর বাইরে!

|
পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রায় নয় হাজার গ্রহাণু বা অ্যাস্টেরয়েড৷ এর মধ্যে প্রায় পনেরশ’টিতে চাইলে যেতে পারবে মানুষ৷ মূল্যবান সব খনিজ উপাদানে ভরা এসব গ্রহাণু৷ সেগুলোর খোঁজেই এবার কাজ শুরু করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা৷
ত্রিশ মিটার দৈর্ঘ্যের ছোট্ট একটি গ্রহাণুতে যে পরিমাণ প্ল্যাটিনাম থাকতে পারে তার মূল্য অর্থের হিসেবে প্রায় ২৫ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার৷ অর্থাৎ প্রায় দুই লক্ষ চার হাজার থেকে চার লক্ষ আট হাজার কোটি টাকা৷
এই একটি মাত্র পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যাচ্ছে গ্রহাণুগুলো ঠিক কতটা মূল্যবান হতে পারে৷ আর মানুষের কাজ যেখানে সম্পদ খুঁজে বেড়ানো, সেখানে পৃথিবীর বাইরের এই খনিগুলোতে যে এখনো বিজ্ঞানীদের পা পড়েনি সেটাই আশ্চর্যের৷ তবে এর কারণটা বোধ করি সবার জানা৷ প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির অভাব৷

তবে এবার সেই অভাব দূর করতে কাজ শুরু করেছে মার্কিন কোম্পানি ‘প্ল্যানেটরি রিসোর্সেস'৷ প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করছে তারা৷ সম্প্রতি তারা জানিয়েছে, আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে তারা মহাকাশে একটি টেলিস্কোপ পাঠাবে যেটা খনিজ সম্পদে ভরপুর গ্রহাণু খুঁজে বের করবে৷ এছাড়া তাদের আরেকটি পরিকল্পনা হচ্ছে, মহাকাশে খনিজ আহরণে কাজ করার জন্য কম খরচের রোবটচালিত যান তৈরি করা৷ কেননা সেটা না হলে বর্তমানে একটি মহাকাশযান পরিচালনা করতে যে খরচ তা দিয়ে খনিজ সংগ্রহ অভিযান লাভজনক করা যাবে না৷

গ্রহাণুর একটি পৃথিবীতে আঘাত করলে কী হতে পারে তার একটি কাল্পনিক চিত্র
মার্কিন ধনাঢ্য সব ব্যক্তিরা এই কোম্পানিতে অর্থ বিনিয়োগ করছেন৷ এর মধ্যে রয়েছে গুগলের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ল্যারি পেজ ও এরিক স্মিথ৷ এছাড়া আছেন ‘টাইটানিক' ছবির পরিচালক জেমস ক্যামেরন৷ আছেন মাইক্রোসফটের সাবেক প্রধান সফটওয়্যার আর্কিটেকচার চার্লস সিমোনি, গুগলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক কবিতার্ক রাম শ্রীরাম৷
এসব গ্রহাণুতে প্লাটিনাম ছাড়াও রয়েছে লোহা, নিকেল, সালফার বা গন্ধক৷ রয়েছে আরও সব নাম না জানা খনিজ পদার্থ, যেগুলো দিয়ে সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা যাবে৷ এছাড়া গ্রহাণুতে থাকা পানি দিয়ে তরল অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন তৈরি করা যেতে পারে, যেটা রকেটের জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে৷ এটা সম্ভব হলে মহাকাশ গবেষণার কাজে যে যান বা কৃত্রিম উপগ্রহগুলো কাজ করছে সেগুলোর জ্বালানি সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
তবে অনেক বিশেষজ্ঞ প্ল্যানেটরি রিসোর্সেস এর এই প্রকল্পের সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন৷ কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিশ্চিত যে, আজ থেকে দশ বছর পর তারা সফলতার মুখ দেখতে পাবেন৷

Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger