Type of diversity: darauinabadidera naitameyara -5

|

বিবর্তন তত্ত্বকে বিজ্ঞানের নামে প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব হিসেবে চালিয়ে দিয়ে ডারউইনবাদীদের কল্পকাহিনী প্রচারকে উন্মোচন করার সহজ ও কার্যকর একটি পন্থা হচ্ছে সাধারণ লোকজন ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা শেখানো। বেশী নয় মাত্র দুটি মৌলিক প্রশ্ন শেখালেই হবে। তাহলে দেখা যাবে বড় বড় ডারউইনবাদীরাও সাধারণ লোকজন ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। যেমন, এক প্রজাতি থেকে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতি বিবর্তিত হওয়ার প্রমাণ কোথায়? নির্দিষ্ট একটি জায়গায় আষ্টেপিষ্টে চেপে ধরতে হবে। কেউ কেউ হয়ত দুটি প্রজাতির মধ্যে কিছু সাদৃশ্য দেখানোর চেষ্টা করবেন। সেক্ষেত্রে পরবর্তী প্রশ্ন হচ্ছে দুটি প্রজাতির মধ্যে কিছু সাদৃশ্য থাকা মানেই কী করে প্রমাণ হয় যে এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতি ধাপে ধাপে বিবর্তিত হয়েছে? কেউ কেউ আবার জীবাশ্ম কিংবা ডিএনএ’র উদাহরণ নিয়ে আসতে পারেন। এক্ষেত্রেও একই ধরণের প্রশ্ন করতে হবে। এভাবে যৌক্তিক প্রশ্ন করা শুরু করলেই দেখবেন যে তারা বিজ্ঞানের নামে ধর্মের মতো করে বিবর্তনবাদের কল্পকাহিনী প্রচার করার মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন, যেহেতু বিবর্তন তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই।


নীচের ভিডিওতে সরীসৃপ প্রজাতির একটি প্রাণীর শিকার ধরার পদ্ধতিটা খুব ভালভাবে লক্ষ্য করুন। দেখবেন যে বিশাল লম্বা জিহ্বাকে দ্রুতগতিতে বাহিরে ছুঁড়ে দিয়ে শিকার ধরছে। বেশ দর্শনীয়। তারা সরাসরি মুখ দিয়ে শিকার ধরে না। তো এই যে বিশাল লম্বা জিহ্বাকে বাহিরে ছুঁড়ে দিয়ে শিকার ধরছে – এই পদ্ধতি কীভাবে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব? এরকম একটি পদ্ধতি কি আদৌ ধাপে ধাপে বিবর্তিত হতে পারে? লম্বা জিহ্বা আর শিকার ধরার পদ্ধতি যদি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হতে থাকে তাহলে সেই ধাপগুলোতে প্রাণীটার অবস্থা কেমন হবে? ভেবে দেখুন।

Chameleon-1

Chameleon-2

প্রজাপতিকে যারা হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখেছেন তারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে প্রজাপতির ডানা অত্যন্ত সূক্ষ্ম, মসৃণ, ও কারুকার্যখচিত এবং ডানাতে এক ধরণের পাউডারও থাকে যে পাউডার প্রজাপতির ডানাকে পিচ্ছিল করে রাখে। শুধু তা-ই নয়, প্রজাপতির সম্মুখদিকে সুঁচের মতো অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও লম্বা শুঁড়ও লক্ষণীয়। প্রজাপতির মতো অতি সূক্ষ্ম, মসৃণ, ও কারুকার্যখচিত ডানাযুক্ত প্রজাতি কোথা থেকে ও কীভাবে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হবে? এই ধরণের বিবর্তন কী করে সম্ভব? নিজেরাই দেখুন:

Butterfly-1

Butterfly-2

উপসংহার: সরীসৃপ প্রজাতির লম্বা জিহ্বা আর শিকার ধরার পদ্ধতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে অন্য কোন প্রাণী থেকে বিবর্তিত হতে পারে না। এই ধরণের বিবর্তনের পক্ষে কোন প্রমাণও নাই। ফলে এই প্রাণীকে একদম প্রথম থেকেই সব কিছু সহ পূর্ণাঙ্গভাবে থাকতে হবে, যেটি বিবর্তন তত্ত্বের বিপরীত। প্রজাপতির ক্ষেত্রেও অনুরূপ যুক্তি প্রযোজ্য।

প্রকৃতির বৈচিত্র্য: ডারউইনবাদীদের নাইটমেয়ার-৬

বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী এককোষী একটি জীব থেকে উদ্ভিদজগত ও প্রাণীজগত সহ পুরো জীবজগত বিবর্তিত হয়েছে। একটি জীবের জায়গায় একাধিক হলে বিবর্তন তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব যেমন কারো পক্ষেই প্রমাণ করা সম্ভব নয় তেমনি একটি জীব থেকে পুরো জীবজগতের বিবর্তন প্রমাণ করাও অসম্ভব। ফলে এই তত্ত্বকে কোন ভাবেই বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব বলা যেতে পারে না। এখানে আরো স্মরণ রাখতে হবে যে, বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী “এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন” এর মাধ্যমে উদ্ভিদজগত ও প্রাণীজগত বিবর্তিত হয়েছে। ডারউইনবাদীদের বিশ্বাস অনুযায়ী বিবর্তন প্রক্রিয়াকে যদি পুনরাবৃত্তি করা হয় তাহলে বর্তমান জীবজগতের পরিবর্তে সম্পূর্ণ ভিন্ন জীবজগত বিবর্তিত হতে পারে। এটি তাদেরকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতেই হবে। নইলে বিবর্তনকে একটি পরিকল্পিত ও নির্ধারিত প্রক্রিয়া হিসেবে স্বীকার করতে হয় – যেটি তাদের মতবাদের বিরুদ্ধে যাবে। ফলে বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী ডারউইনবাদীরা হচ্ছে অসংখ্য অপ্রত্যাশিত ও দৈব ঘটনার ফলাফল!

নিচের ভিডিও দুটিতে হামিং বার্ড ও মৌমাছির পাখার গতি লক্ষ্য করুন। পাখার গতি এত দ্রুত যে, খালি চোখে প্রায় দেখাই যায় না। প্রকৃতিতে এরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে। প্রশ্ন হচ্ছে হামিং বার্ড ও মৌমাছির পাখার অত্যন্ত দ্রুতগতি কি প্রথম থেকেই ছিল নাকি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হয়েছে? এরা যদি ভিন্ন প্রজাতি থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হয়ে থাকে তাহলে প্রথম থেকেই পূর্নাঙ্গ পাখা ও এত গতি এক সাথে থাকা সম্ভব নয়। অন্যদিকে পাখার গতি ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পাওয়াই বা সম্ভব কী করে? পাখার গতি যখন ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পাচ্ছিল তখন হামিং বার্ড ও মৌমাছির দৈহিক অবস্থা কেমন ছিল? ভেবে দেখুন।

Hummingbird

Bee

উপসংহার: হামিং বার্ড ও মৌমাছির পাখা, পাখার দ্রুত গতি, এবং দৈহিক অবস্থা যদি যুগপৎভাবে বিবেচনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে অন্য কোন প্রাণী থেকে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব নয় এবং এই ধরণের বিবর্তনের পক্ষে কোন প্রমাণও নাই। ফলে প্রাণী দুটিকে প্রথম থেকেই পূর্ণাঙ্গভাবে থাকতে হবে, যেটি বিবর্তন তত্ত্বের পুরোপুরি বিপরীত।

নিচের ভিডিওতে চিতাবাঘ ও হরিণের মধ্যে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে দৌড়ের প্রতিযোগীতা দেখুন। চিতাবাঘ এভাবেই হরিণ শিকার করে খায়। প্রশ্ন হচ্ছে চিতাবাঘ ও হরিণের অত্যন্ত দ্রুতগতি কি প্রথম থেকেই ছিল নাকি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হয়েছে? এরা যদি ভিন্ন প্রজাতি থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হয়ে থাকে তাহলে প্রথম থেকেই এত গতি থাকা সম্ভব নয়। অন্যদিকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে গতি যখন বৃদ্ধি পাচ্ছিল তখন প্রাণী দুটির দৈহিক অবস্থা কেমন ছিল? প্রাণী দুটির ক্ষীপ্র গতি আর জৈবিক বিবর্তন কি যুগপৎভাবে ঘটেছিল? তা কী করে সম্ভব!

Cheetahvsgazelle

উপসংহার: চিতাবাঘ ও হরিণের মধ্যে যে প্রতিযোগীতা দেখছেন সেটি একটি পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি, যেখানে ক্ষীপ্র গতির ব্যাপারও জড়িত। এরকম একটি পদ্ধতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে অন্য প্রাণী থেকে বিবর্তিত হতে পারে না এবং এই ধরণের বিবর্তনের পক্ষে কোনই প্রমাণ নাই। ফলে প্রাণী দুটিকে প্রথম থেকেই সব কিছু সহ পূর্ণাঙ্গভাবে থাকতে হবে, যেটি বিবর্তন তত্ত্বের সাথে সাংঘর্ষিক।

নিচের ভিডিওতে একটি মাছরাঙার মাছ শিকার করার পদ্ধতিটা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। বেশ উঁচুতে কিছুক্ষণ স্থির থেকে, যথাযথভাবে শিকারীর দিকে তাক করে, পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মাছ শিকার করছে। মাছরাঙার এই মাছ শিকার করার কৌশল কীভাবে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব? এই পদ্ধতি যদি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হতে থাকে তাহলে সেই মধ্যবর্তী ধাপগুলোতে মাছরাঙার দৈহিক অবস্থা ও শিকার করার পদ্ধতি কেমন হবে? আবারো ভেবে দেখুন।

Kingfisher

উপসংহার: মাছরাঙা যে পদ্ধতিতে মাছ শিকার করে সেই পদ্ধতি সহ মাছরাঙার মতো কোন প্রজাতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে অন্য কোন প্রাণী থেকে বিবর্তিত হতে পারে না। ফলে এই প্রাণীকে একদম প্রথম থেকেই সব কিছু সহ পূর্ণাঙ্গভাবে থাকতে হবে, যেটি বিবর্তন তত্ত্বের সাথে যায় না।
 

প্রকৃতির বৈচিত্র্য: ডারউইনবাদীদের নাইটমেয়ার-৭



হৃৎপিন্ড একটি অত্যন্ত জটিল ও পেশীবহুল অঙ্গ যেটি পৌনপৌনিক ছান্দিক সংকোচনের মাধ্যমে রক্তনালীর ভেতর দিয়ে রক্ত সারা দেহে প্রবাহিত করে। গড়পড়তায় একটি মানব হৃৎপিন্ড প্রতি মিনিটে ৭২ বার স্পন্দিত হয়। হৃৎপিন্ডের স্পন্দন থেমে যাওয়া মানে অক্কা পাওয়া। মানব হৃৎপিন্ড ৪টি মূল প্রকোষ্ঠে বিভক্ত, ডান অলিন্দ ও ডান নিলয় এবং বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়। হৃৎপিন্ডের ডান অংশের কাজ হলো পুরো দেহ হতে ডান অলিন্দে অক্সিজেন-শূন্য রক্ত সংগ্রহ করা এবং ডান নিলয়ের মাধ্যমে তা পাম্প করে ফুসফুসে প্রেরণ করা যাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড রক্ত হতে নিষ্কাশিত এবং অক্সিজেন যুক্ত হতে পারে। হৃৎপিন্ডের বাম অংশ অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত ফুসফুস হতে বাম অলিন্দে গ্রহণ করে। বাম অলিন্দ হতে রক্ত বাম নিলয়ে স্থানান্তরিত হয় এবং সারা দেহে সঞ্চারিত হয়। ডান অলিন্দ হতে রক্ত ট্রাইকাস্পিড কপাটিকার ভেতর দিয়ে ডান নিলয়ে প্রবেশ করে। এখান থেকে রক্ত ফুসফুসীয় সেমিলুনার কপাটিকার ভেতর দিয়ে বেরিয়ে ফুসফুসীয় ধমনী দিয়ে ফুসফুসে পৌছে। ফুসফুস হতে রক্ত ফুসফুসীয় শিরা দিয়ে বাম অলিন্দে যায়। সেখান থেকে রক্ত বাইকাস্পিড কপাটিকার ভেতর দিয়ে বাম নিলয়ে প্রবেশ করে। বাম নিলয় এই রক্তকে এ্যাওটিক সেমিলুনার ভাল্বের ভেতর দিয়ে এ্যাওর্টায় পাম্প করে পাঠায়। এ্যাওর্টা কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয় এবং এইসব প্রধান শাখা ধমনী দিয়ে রক্ত সারা দেহে সঞ্চালিত হয়। রক্ত ধমনী হতে তার চেয়ে সরু ছোট ধমনীতে প্রবেশ করে এবং শেষ পর্যায়ে আরও ক্ষুদ্র কৈশিকনালীর মাধ্যমে কোষে পৌছায়। এরপরে অক্সিজেন-শূণ্য রক্ত ছোট শিরার ভেতর দিয়ে গিয়ে শিরায় পৌছায়। এইসব শিরা পরে সুপিরিয়র ও ইনফেরিয়র ভেনাকেভা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত ডান অলিন্দে পৌছায় এবং আবার উপরোক্ত পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে। হৃৎপিন্ড কার্যত হৃৎপেশীর একটি বুনানি যারা পরস্পর সাইটোপ্লাজমিয় সংযুক্তি দিয়ে সংযুক্ত। ফলে বৈদ্যুতিক সংকেত একটি কোষে পৌছালে তা দ্রুতগতিতে সকল কোষে পৌছে যায় এবং পুরো হৃৎপিন্ড তখন একসাথে সংকুচিত হয়। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)

এই হচ্ছে খুব সংক্ষেপে হৃৎপিন্ডের কার্যপ্রণালী। ছবি এবং ভিডিওতে হৃৎপিন্ডের গঠনপ্রণালী ও কার্যপ্রণালী দেখা যেতে পারে। এবার আপনারাই বলুন, এরকম একটি জটিল ও সূক্ষ্ম মেশিন কি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব? এই ধরণের মেশিন এর ক্ষেত্রে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তনের সুযোগ-ই বা কোথায়, যেখানে অত্যন্ত সূক্ষ্ম শিরা-উপশিরা এবং একাধিক প্রকোষ্ঠ এক সাথে থেকেই তবে সঠিকভাবে কাজ করে। হৃৎপিন্ডের মতো মেশিন ‘ধাপে ধাপে’ বিবর্তিত হতে থাকলে মানুষ বা পশু-পাখি তো বেঁচে থাকতেই পারবে না! এক শতাংশ কিংবা এক দশমাংশ হৃৎপিন্ড কিন্তু বাস্তবে সম্ভব নয়।

Heart

ডারউইনবাদীদের ‘সাধারণ পূর্বপুরুষ’ তথা এককোষী জীবের কিন্তু কোন হৃৎপিন্ড ছিল না। ফলে হৃৎপিন্ডের বিবর্তন শুরুই বা হবে কোথা থেকে? অথচ সেই হৃৎপিন্ড-বিহীন এককোষী জীব নাকি মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে বিবর্তিত হতে হতে একদিন মানুষ ও পশু-পাখিদের মতো মিলিয়ন মিলিয়ন হৃৎপিন্ড-ওয়ালা প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়েছে! আরো কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, যেগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হওয়া বাস্তবে সম্ভব নয়। ফুসফুস ও পরিপাকতন্ত্রের কথাই ধরা যাক। ফুসফুস ও পরিপাকতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ না করলে জীব-জন্তু বেঁচে থাকতেই পারবে না। তাহলে আবার বিবর্তন বা বংশ বৃদ্ধি হবে কী করে? এমনকি অতি সূক্ষ্ম শিরা-উপশিরা’র কথাই ধরুন। শিরা-উপশিরাগুলো কোথা থেকে ও কীভাবে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হবে, যদি শুরুতেই এগুলো না থাকে! পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গের প্রজননতন্ত্রের বিবর্তনের কাহিনী কিন্তু রয়েই গেল!

উপসংহার: হৃৎপিন্ডের মতো একটি মেশিন যেহেতু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হতে পারে না এবং এই ধরণের বিবর্তনের পক্ষে যেহেতু কোন প্রমাণ নাই সেহেতু প্রথম থেকেই প্রাণীদের দেহে পূর্ণাঙ্গ হৃৎপিন্ড থাকতে হবে। আর প্রাণীদের দেহে পূর্ণাঙ্গ হৃৎপিন্ড থাকতে হলে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই প্রাণীগুলোকেও পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় থাকতে হবে, যেটি বিবর্তন তত্ত্বের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

প্রকৃতির বৈচিত্র্য: ডারউইনবাদীদের নাইটমেয়ার-৮



শামুক হচ্ছে মোলাস্কা পর্বের গ্যাস্ট্রোপডা শ্রেণীর প্রায় সকল সদস্যের সাধারণ নাম। এরা নরমদেহী এবং প্রাপ্তবয়স্কদের দেহ একটি প্যাঁচানো খোল দ্বারা আবৃত থাকে। কিছু শামুক ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাস নেয়। কিছু শামুক আবার ফুলকা জাতীয় অঙ্গের সাহায্যে শ্বাস নেয়। স্থলচর শামুকদের মাথায় দুইজোড়া কর্ষিকা থাকে যা শামুকের দরকার পড়লে গুটিয়ে রাখতে পারে। পেছনের কর্ষিকাজোড়ায় থাকে চোখ। জলজ শামুকদের একজোড়া গোটানোর অনুপযোগী কর্ষিকা থাকে যার গোড়ায় চোখ থাকে। শামুকের খোলক জ্যামিতিক স্পাইরাল বা প্যাঁচের আকারে তৈরী। বেশীরভাগ খোলকই ডানহাতি, অর্থাৎ যদি খোলকের কেন্দ্রের উঁচু অংশটি দর্শকের দিকে তাক করে থাকে তবে প্যাঁচ বা স্পাইরালগুলি ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘোরে সেদিকে ঘুরতে ঘুরতে এগোবে। অধিকাংশ শামুকই এপিথেলীয় সিলিয়া দ্বারা আবৃত পেশল পায়ের সাহায্যে পিছলে চলে, এই পা মিউকাসের সাহায্যে পিচ্ছিল হয়ে থাকে। পায়ের পেশীতে পরপর ঘনঘন সঙ্কোচন ঘটিয়ে শামুক চলাচল করে। শামুকের পায়ে থাকা মিউকাস ঘর্ষণ কমিয়ে তাদের পিছলে চলাতে সাহায্য করে। এই মিউকাস ধারালো বা তীক্ষ্ণ বস্তু লেগে শামুকের দেহ কেটে যাওয়া থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে। এই কারণে শামুক ধারালো বস্তু যেমন ব্লেডের উপর দিয়েও চলতে পারে কিন্তু তাতে তাদের দেহ কেটে ছিঁড়ে যায় না। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)

এই হচ্ছে শামুকের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। ছবিতে বিভিন্ন আকার-আকৃতির শামুক দেখানো হলো। শামুকের নরম মাংসল বিশিষ্ট দেহ অত্যন্ত শক্ত খোল দ্বারা আবৃত থাকে যাতে করে প্রয়োজনে শত্রুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, খোলগুলো আবার অত্যন্ত সুন্দর করে জ্যামিতিক ধাঁচে ডিজাইন করা। এবার ভেবে দেখুন। খোল-বিহীন কোন প্রজাতি থেকে অত্যন্ত শক্ত খোল-বিশিষ্ট সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতি কেন ও কী করে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হবে? প্রাপ্তবয়স্কদের অত্যন্ত শক্ত খোল কি এক সময় বেশ নরম ছিল তারপর ধাপে ধাপে শক্ত হয়েছে? অধিকন্তু, খোল যতক্ষণ পর্যন্ত ধাপে ধাপে শক্ত হচ্ছিল সেই ধাপগুলোতে খোলের ভেতরে নরম মাংসল বিশিষ্ট দেহও কি ধাপে ধাপে বিবর্তিত হচ্ছিল! পুরো ব্যাপারটা যদি যৌক্তিক ও বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভেবে দেখা যায় তাহলে ডারউইনবাদীদের প্রতি করুণা ছাড়া আর কিছু বলার থাকবে না। কেননা বাস্তবে এই ধরণের বিবর্তন সম্ভব নয়।





Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger