রাডার কী ও কিভাবে কাজ করে

|

দুরের কোন বস্তুর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তাকে বলে রাডার। রাডার (RADAR ) আসলে একটি শব্দসংক্ষেপ (Radio Detecting and Ranging)। এই রাডারের সাহায্যে ঘন অন্ধকার রাতেও দূরের বস্তুকে লক্ষ্য করা যায়। এর ফলেই রাডার উড়োজাহাজের পাইলট কিংবা সামূদ্রিক জাহাজের ক্যাপ্টেনের একটি তৃতীয় নয়ন হিসাবে কাজ করে। যদি কোনো জাহাজের ক্যাপ্টেন তাঁর রাডার যন্ত্রের পর্দায় চোখ রাখেন তাহলে দেখতে পাবেন পর্দার কোথাও ফুটে উঠেছে একটি ক্ষুদ্র আলোর বিন্দু । 
রাডারের পর্দাটি আসলে একটি টেলিভিশন পর্দার মতো। এই পর্দার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে আছে একটি অপেক্ষাকৃত বড় আলোর বিন্দু। বড় আলোর বিন্দুটি হল নিজের অবাস্থান। এর চারপাশে যদি কোনো আলোর বিন্দু ফুটে ওঠে তাহলে ধরে নিতে হবে ওখানেই আছে বা এত দূরে আছে নির্দিষ্ট বস্তুটা। রাডারের পর্দার নম্বর এবং অক্ষরই বলে দতে পারে বস্তুটির অবস্থান কোথায়, কোন দিকে আছে এবং কত দূরে আছে। 

রাডার যন্ত্র আকাশে উড়োজাহাজে, সামুদ্রিক জাহাজে এবং স্থলভাগের যে কোনো স্থানেই ব্যবহার করা যায়। স্থলভাগে বসানো রাডার যেমন বলে দিতে পারে আকাশে কোথাও শত্রু বিমানের আগমন ঘটেছে তেমনি বিমানে অবস্থিত রাডারও বলে দিতে পারে নিচে কোথায় বিমান বন্দরের অবস্থান, টার লক্ষ্যবস্তু বা তার আশেপাশের অন্য কোনো শত্রুর বিমান আছে কিনা, কত দূরে আছে।


রাডার স্টেশন হল এক ধরনের মিনি সাইজের বেতার কিংবা টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্রের মতো। এই কেন্দ্র থেকে আকাশে বেতার তরঙ্গ নিক্ষেপ করা হয়। যখন এই বেতার তরঙ্গ আকাশে কোনো কঠিন বস্তুতে আঘাত করে তখন প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে। এই প্রত্যাবর্তনকারী তরঙ্গই ধরা পড়ে রাডারের গ্রাহক যন্ত্রে। রাডারের গ্রাহক যন্ত্রের অংশটি প্রায় টেলিভিশনের মতো। এখানে প্রত্যাবর্তনকারী তরঙ্গের আলোর সংকেতই পর্দায় ভেসে উঠে আলোর বিন্দু রূপে। রাডারের এই তরঙ্গ খুবই দ্রুত ছুটে যায় এবং দূরের বস্তুতে আঘাত করে আবার ফিরে আসে এবং আলোর বিন্দু হয়ে পর্দায় ভাসে উঠে - এই প্রক্রিয়াটি চোখের পলকে ঘটে যায়।

Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger