Movie Review: The Notebook (Best Romantic movie Ever)

|

প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়ে থাকে একটি নোট বুক। এই নোট বুকে লেখা থাকে জীবনের না বলা অনেক কথা। হয়তো জীবনের অনেক ঘটনাই আমরা প্রকাশ করি না কিন্তু হৃদয়ের সে নোট বুকে লেখা থাকে। হৃদয়ের এই নোট বুকে যার নাম যার স্মৃতি একবার লেখা হয়ে যায় কিংবা ছবি আঁকা হয়ে যায় তাঁর নাম সারা জীবন সে নোট বুকে থেকে যায়। সময় চলে যায় কিন্তু জীবনের কোন এ মূহুত্বের সামান্য কোন একজন মানুষের একটু ছোয়া সারা জীবন বুকের গভীরের সে নোট বুকে রয়ে যায়। ভাবতে গেলে শুধু একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। প্রিয় পাঠক, আপনার মনেও এরকম একটি নোট বুক আছে যেরকম আছে আমার মনে। আমি যে মেয়েটিকে একবার ভালবেসেছিলাম তার সব স্মৃতি আমার মনের নোট বুকে এখনও জীবন্ত হয়ে আছে। এরপর অনেকেই এ জীবনে এসেছে কিন্তু সে একজনের মতো আর কেউ সে নোট বুকে স্থান পায়নি। জীবনে অনেক কথাই থাকে যা শুধু মনের নোট বুকে রেখেই জীবন শেষ করতে হয়। আমরা হয়তো জীবন চলার প্রয়োজনে মানুষের সংস্পর্শে আসি কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছি একজন সাধারন হাসি খুশি মানুষের মনের নোট বুকে রয়েছে কোন একজন মানুষকে না পাওয়ার হাহাকার, কষ্ট । এরকম দুজন তরুন তরুনী ভালবেসে পরস্পরের মনের আকুতি, পাওয়া না পাওয়ার কষ্ট এবং বিভিন্ন প্রজম্মের মানুষের ভালবাসার স্বপ্নের মানুষটিকে যারা মনের নোট বুকে রেখেছেন তাদের কাহিনী নিয়ে নিকোলাস স্পার্ক রচনা করেছেন 
 
The Notebook (2004) । পাঠক, আপনারা যারা নিয়মিত আমার মুভি রিভিউ পড়ছেন তারা আশা করছি নিকোলাস স্পার্কের ছবির ধরন সম্পর্কে অবগত আছেন। কারন নিকোলাস স্পার্কের প্রায় সবগুলো ছবি নিয়ে আমি রিভিউ লিখেছি। নিকোলাস স্পার্কের রচনাগুলোতে মানবিক সম্পর্ক এতো নিখুতভাবে ফুটে ওঠে যা কখনও কখনও আমাদের নিজের জীবনের সাথে মিলে যাবে। ভালবেসে না পাওয়ার কষ্ট নিকোলাস স্পার্কের ছবির মুল থিম তারপরেও মনস্তাত্তিক জটিলতার সরল প্রকাশ নিকোলাস স্পার্ক খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলেন। ভালবাসতে জানতে হয়, ভালবাসতে শিখতে হয় এ কথাগুলো জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হয়ে দাড়ায় যখন আপনি নিকোলাস স্পার্কের ছবিতে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন। বাস্তবতার কাছে অনেক সময় ভালবাসা হেরে যায় কিন্তু মনের গভীরের রয়ে যাওয়া ক্ষত চিহ্নগুলো আপনাকে তীরের মতো প্রশ্নবিদ্ধ করবে সারা জীবন।



কাহিনীঃ
প্রিয় দর্শক, চলুন আমরা এ ছবিটি দেখে নেই। The Notebook (2004) ছবিটি পরিচালনা করেছেন নিক কাসাভিটিস এবং এ ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। ছবির কাহিনী ১৯৪০ সালের দু’জন তরুন তরুনীর ভালবাসাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এ ছবির নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইয়ান গসলিং এবং নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন রাসেল ম্যাকএডামস । ছবির শুরুতে দেখা যায় বয়স্ক একজন ভদ্রলোক (জেমস গ্রেনার্) একটি নার্সিং হোমের চিকিৎসারত একজন ভদ্র মহিলাকে (জেনা রোনাল্ডস) একটি নোট বুক খুলে একটি গল্প পড়ে শোনাতে থাকেন। খুব উৎসাহের সাথে প্রবীন প্রায় একই প্রজম্মের দুই নরনাড়ী সেই গল্পটি শুনতে থাকেন। সেই বৃদ্ধ গল্পটি বলে যায় এবং ভদ্র মহিলা আনমনে গল্পটি শুনে যায়। গল্পটি হচ্ছে এলি এবং নোয়াহর জীবনে ভালবাসা এবং তাদের ভালবাসার পরিনতি, বাস্তবতা নিয়ে গড়ে ওঠা জীবনের শেষ দিনগুলোর অবস্থা । এলি হেমিলটন ধনাঢ্য পরিবারের একটি মেয়ে যে গ্রীস্মের ছুটিতে বেড়াতে যায়। এলির সাথে দেখা হয় নোয়াহ নামে একটি ছেলের যে স্থানীয় একটি কাঠের মিলে কাজ করে। সে গ্রীস্মে এলির মাঝে নোয়াহ তার ভালবাসা খুঁজে পায়। নোয়াহ অনেক চেষ্টার পর এলির মনোযোগ আকর্ষন ও এলির কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ পায়। ব্যাপারটা নোয়াহ এর ক্ষেত্রে এরকম গ্রীস্মে একদিন হয়েছে দেখা, প্রথম দেখায় আমি হয়েছি বোকা। সত্যিই ভালবেসে নোয়াহ বোকা হয়ে গিয়েছিল কারন নোয়াহ ভুলে গিয়েছিল সে সামান্য কাঠ মিলের শ্রমিক কিন্তু এলি হচ্ছে ধনাঢ্য বাবার একমাত্র কন্যা। সূতরাং নোয়াহ এর বোকা প্রেম সত্যিই তার জন্য কাল হয়ে দাড়াবে।

একরাতে নোয়াহ এলিকে নিয়ে ছুটে গেলো পুরোনো একটি বাড়িতে। এলিকে ছুয়ে নোয়াহ শপথ করলো নোয়াহ একদিন এই বাড়িটি কিনে এলির জন্য পূর্ণনির্মান করবে। এভাবেই নোয়াহ ও এলির ভালবাসার গভীরতা বাড়তে লাগলো। নোয়াহ এর বন্ধু খবর নিয়ে আসলো এলিকে তার বাবা-মা হন্য হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। নোয়াহ এলিকে নিয়ে এলিদের বাসায় গেলো। এলির বাবা-মা নোয়াহকে দেখে পছন্দ করলো না কারন নোয়াহ সামান্য কাঠ মিলে কাজ করে সূতরাং সে এলিকে বিয়ে করার অযোগ্য। বাস্তবতার কাছাকাছি এসে নোয়াহ বুঝতে পারে সত্যিই সে এলিকে বিয়ে করার যোগ্যতা রাখেনা। নোয়াহ ফিরে যেতে চায় কিন্তু এলি যখন নোয়াহ এর পিছু পিছু যায় তখন এলি নোয়াহ এর ফিরে যাওয়া মেনে নিতে পারে না কারন এলি মনপ্রাণ দিয়ে নোয়াহ কে ভালবাসে। প্রিয় দর্শক, আবার পূর্বের সে কথায় আসি ভালবেসে যার ছবি মনের নোট বুকে আঁকা হয়ে যায় তাকে মনের নোট বুক থেকে মুছে দেওয়া যায় না। জীবনের এ বেলায় এসে আজ নোয়াহ ও এলি বুঝতে পারে এ সম্ভব নয়, ভালবাসা মুছে দেওয়া যায় না। তারপেরও বাস্তবতার কাছে সম্পর্ক হার মেনে যায়, মূহুত্বের মধ্যে তাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। আজ শুধু দু’জনার দুটি পথ-------। ভালবাসার সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলেও নোয়াহ এবং এলি চরম অনুতপ্ত হয়। অনুভবের মাধ্যমে এলি এবং নোয়াহ তাদের ভালবাসা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে।

গ্রীস্মের ছুটি শেষে এলিদের পরিবার সিব্রুক থেকে চলে যায় কিন্তু বিদ্ধস্ত মনে নোয়াহ প্রতিদিন এলিকে লিখে যায় একটি করে চিঠি। দর্শক নিকোলাস স্পার্কের ছবি যেনো চিঠি ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এ দুটি চরিত্র ছাড়া সম্পূর্ণ হতে চায় না। The Notebook (2004) ছবিতেও চলে আসে সেই চিঠি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। নোয়াহ প্রতিদিন এলিকে একটি করে চিঠি লিখলেও সে চিঠি এলির হাতে পৌছায় না কারন এলির মা সে চিঠিগুলো লুকিয়ে রাখে। অনেকগুলো চিঠি লেখার পরও যখন এলি কোন চিঠির উত্তর দেয় না তখন নোয়াহ এলিকে বিদায় জানিয়ে শেষ একটি চিঠি লিখে। কিন্তু এলির হাতে নোয়াহ এর লেখা শেষ চিঠিও পৌছায় না। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নোয়াহ সিদ্ধান্ত নেয় সে সরে দাড়াবে এলির জীবন থেকে। নোয়াহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্ত্ততি নেয় এবং যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। অন্যদিকে এলি একটি কলেজে এবং সেখানে নার্স হিসেবে কাজ করে। এলি যখন নার্স হিসেবে কাজ শুরু করে তখন সেখানে যুদ্ধে আহত আমেরিকান তরুন এক আইনজীবী লন হেমন্ডের সাথে দেখা হয়। লন হেমন্ড সুদর্শন ধনাঢ্য পরিবারের পেশাজীবী সূতরাং এলির জীবনে লন নতুনভাবে প্রবেশ করে। এলি ও লন বিয়ে করে সংসারী হয়। ততোদিনে এলির জীবনস্মৃতি থেকে নোয়াহ নামে সে যুবকের স্মৃতি মুছে যেতে থাকে। এলির সারাবেলা কেটে যায় লনকে ভেবে। কখনও পার্কে, কফি শপে কিংবা একান্ত মূহুত্বে। এরই মধ্যে নোয়াহ যুদ্ধ শেষে ফিরে আসে। একদিন নোয়াহ এলিকে লনের সাথে একান্ত মুহুত্বে দেখতে পায়। পুরোনো ক্ষতে আবার শুরু হয় রক্ত ক্ষরণ। এলি নোয়াহকে ভুলে গেলেও নোয়াহ মনের নোট বুকে এলির জন্য ভালবাসা এখনও বহমান। কিন্তু সেদিনের এলি ও লনের সে মূহুর্ত্ব নোয়াহকে ক্ষত বিক্ষত করতে চায়। নোয়াহ প্রথম জীবনে এলিকে কথা দিয়েছিল যে, সে সেই পুরোনো বাড়িটি কিনে মেরামত করবে এবং পূর্ননির্মান করবে। নোয়াহ বিশ্বাস করে যদি তার ভালবাসা সত্য হয়ে থাকে তবে এলি একদিন আবারও নোয়াহ এর কাছে ফিরে আসবে। একসময় নোয়াহ তার বাড়িটি নির্মান শেষ করে এবং বিক্রি করতে চায়।

দর্শক ছবিটির এই পর্যায়ে আবারও দেখতে পাবেন সেই বয়স্ক ভদ্রলোক সেই ভদ্রমহিলাকে নোট বুক থেকে গল্পটি পড়ে শোনাচ্ছে। গল্পটি শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে সেই ভদ্রমহিলা বুঝতে পারে এ গল্পটি হচ্ছে তার জীবনের একটি গল্প। গল্পের এলি চরিত্রের সেই মেয়েটি হচ্ছে এই ভদ্র মহিলা যিনি Alzhemers Diseases আক্রান্ত হয়ে এই নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন। যিনি তার জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনাই ভুলে বসে আছেন। জীবনের নোট বুক থেকে সে মুহুত্বগুলো তুলে এনে নোয়াহ প্রতিদিন একটু একটু করে বলে যায় এলিকে। এলি শুনতে শুনতে থেমে যায় আবার শুনতে চায়।

ছবিতে কাহিনী আবার মোড় নিয়ে ফিরে যায় ১৯৪৭ সালের কোন একদিনে। সেদিন এলি পেপারে নোয়াহ এর বাড়ির সংবাদ পড়ে সিদ্ধান্ত নেয় সে বাড়িটি দেখতে যাবে। এলি পরদিন নোয়াহ এর বাড়ি দেখতে যায়। বহুবছর পর দেখা হয়ে যায় এলি এবং নোয়াহর। নোয়াহ এর বিশ্বাস অবিচল কারণ নোয়াহ একসময় বিশ্বাস করতো তার ভালবাসা যদি সত্য হয় তবে এলি তার কাছে একদিন ফিরে আসবে। এলি আবারও নোয়াহ এর জীবনে ফিরে আসে। বহুবছর পর নোয়াহকে দেখে এলির বুকের ভিতরটা কেঁপে ওঠে। সে রাতে এলি এবং নোয়াহ একসাথে ডিনারে বসে এবং একান্তে কথা হয় দু’জনার। পরদিন নোয়াহ এলিকে নিয়ে যায় একটি লেকে যেখানে তারা একটি নৌকায় ভেসে বেড়ায়। শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টিতে ভিজে এলি ও নোয়াহ। দর্শক ছবির এ অংশটি আপনার প্রাণ ছুয়ে যাবে ক্যামড়ার কাজ দেখে। কী অসাধারন চিত্রায়ণ। ছবির এ অংশের সুর ছন্দ এবং চিত্রায়ণ অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফেরার পথে এলি নোয়াহকে প্রশ্ন করে কেনো নোয়াহ এলিকে কোন চিঠি লিখেনি ? নোয়াহ অবাক হয়ে বলে আমি ৩৬৫টি চিঠি লিখেছি। 

এলি বুঝতে পারে সে বড় ভুল করেছে। এদিকে এলিকে নিতে তার মা নোয়াহ এর বাড়িতে আসে। মা ও মেয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া নাটকীয় কিছু মুহুত্ব দর্শক আপনাদের অবশ্যই ভাবনায় ফেলবে। এলি আজ নোয়াহ ও লনের জীবনে বন্দি হয়ে দুজনকেই ভালবাসে কিন্তু এলির প্রকৃত প্রেম নোয়াহার জন্য তেমনী এলির মাও জীবনে একজনকে ভালবেসেছিল যা কোনদিন এলির মা কাউকে প্রকাশ করেণি শুধু মনের গভীরে থাকা সে নোট বুকে সব লেখা আছে কিন্তু জীবনের এ প্রান্তে এসে এলির মা তার মেয়ের অবস্থা দেখে প্রকাশ না করে পারেনি। বাস্তবতার কাছে হার মেনে ভালবাসা হারালেও মনের নোটবুক থেকে হারিয়ে যায়নি আসল ভালবাসা তাই অনেক বছর পর এলির মা এলির ভালবাসার প্রকৃত মূল্যদিয়ে এলিকে নোয়াহ এর কাছে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়।

ছবির শেষভাগে বয়স্ক নোয়াহ ও এলি অনেক বছর পর সেই নার্সিং হোমে পরস্পরকে চিনতে পারে। নার্সিং হোমের নার্সকে ফাঁকি দিয়ে নোয়াহ পৌঁছে যায় এলির কাছে। বৃদ্ধা এলি নোয়াহকে চিনতে পারে। একই বেডে শুয়ে নোয়াহ ও এলি তাদের ভালবাসা খুঁজে পায়। সারা রাত একই বেডে কেটে যায় এলি ও নোয়াহর। সকালে নার্স এসে এলির বেডে নোয়াহকে দেখে অবাক হয়। খুব অবাক হয়ে নার্স যখন তাদের কাছে যায় ততক্ষনে নার্স বুঝতে পারে খুব বেশী দেরি হয়ে গেছে কারন এলি ও নোয়াহ পরস্পরের হাত ধরে চলে গেছেন ওপারে যে জগৎ থেকে মানুষ ফিরে আসে না। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আমাদের বলতে ইচ্ছে হয় – বেচে থাক ওদের ভালবাসা যুগযুগান্তরের মাঝে। জয় হোক ভালবাসার।

অভিনয়েঃ
রাইয়ান গসলিং (তরুন নোয়াহ)
রাসেল ম্যাকএডামস (তরুনী এলি)
জেমস্ গ্রানার (বয়স্ক নোয়াহ)
জেনা রোল্যান্ডস্ (বয়স্ক এলি)

পরিচালকঃ নিক কাসাভিটিস
প্রযোজকঃ টবি এমিরিস ও মার্ক জনসন
লেখকঃ নিকোলাস স্পার্ক, জেরিমি লিবেন, জেন সারডি
মিউজিকঃ আরন জিগম্যান
সময়ঃ ১২৩ মিনিট
দেশঃ আমেরিকা
ভাষাঃ ইংরেজী
মুক্তিকালঃ মে ২০, ২০০৪
বাজেটঃ ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
আয়ঃ ১১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger