উইন্ডোজ ৮-এর আরো ৮টি ফিচার

|
যতই দিন যাচ্ছে প্রযুক্তি বিশ্বে নতুনের আগমনী বার্তা ছড়াচ্ছে। কেউ কেউ জল্পনা-কল্পনা করে যাচ্ছে আইফোন ৫ নিয়ে, কেউ বা মাতছে অ্যান্ড্রয়েডের পরবর্তী সংস্করণ নিয়ে, কেউ আছে গুগল প্লাসে নতুন আর কী কী সুবিধা আসতে পারে সেই অপেক্ষায়, আর কেউ বা লক্ষ্য রাখছে কী কী নতুন সুবিধা যোগ হতে যাচ্ছে বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এর পরবর্তী সংস্করণ উইন্ডোজ ৮-এ। আর বিজ্ঞান প্রযুক্তি ব্লগে যারা উইন্ডোজ ৮-এ কী কী আসছে তা জানতে আগ্রহী, তাদের জন্যই আজকের এই পোস্ট।

মাইক্রোসফটের স্টিভ সিনোফস্কাই বলেই চলেছেন যে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৮-এ শতাধিক নতুন সুবিধা রয়েছে। কিন্তু এর সম্পূর্ণ লিস্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে উইন্ডোজ ৮-এর অগ্রগতি নিয়ে ইতোমধ্যেই ব্লগ খুলে ফেলেছেন স্টিভ এবং তার উইন্ডোজ ৮-এ কাজ করা টিম। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া ৮টি চমকপ্রদ উইন্ডোজ ৮ সুবিধাগুলো নিম্নরূপঃ

ফাস্ট বুটআপ

অপারেটিং সিস্টেমের উপরেই অনেকাংশে নির্ভর করে কম্পিউটার কতোটা দ্রুত বুটআপ বা চালু হয়ে কাজ করার পর্যায়ে আসে। আর বর্তমানে স্পিডের যুগে সবকিছুতেই দ্রুতগতি না থাকলে ব্যবহারকারীদের যেন চলেই না। তাই তো বহুদিন ধরেই উইন্ডোজের বুটআপ সময় দীর্ঘ হওয়ার কারণে মাইক্রোসফটকে শুনতে হয়েছে নানা সমালোচনা। এবার বোধহয় সমালোচনার পালা শেষ হতে চললো। কেননা, এবার মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই বুটআপ হবে উইন্ডোজ ৮। আন্দাজ করুন কত সেকেন্ড লাগবে বুটআপ হতে? হ্যাঁ, ৮ সেকেন্ড। উইন্ডোজ ৮ কেবল ৮ সেকেন্ডেই বুটআপ হবে। অবিশ্বাস্য হলেও এমনটাই জানাচ্ছে মাইক্রোসফট।

টাচস্ক্রিন পাসওয়ার্ড

অনেকেই হয়তো জেনে গেছেন যে উইন্ডোজ ৮ তৈরি করা হচ্ছে একই সঙ্গে কম্পিউটার এবং ট্যাবলেট ডিভাইসসমূহে ব্যবহারোপযোগী করে। আর তাই এতে টাচস্ক্রিন সুবিধায় বেশ কিছু নতুনত্ব আনা হয়েছে। বিশেষ করে টাচস্ক্রিন কম্পিউটারে পাসওয়ার্ডও দিতে পারবেন টাচস্ক্রিনের মাধ্যমেই। না, টাচস্ক্রিনে ভেসে ওঠা কিবোর্ডে পাসওয়ার্ড টাইপ করে নয়, বরং, ছবির মাধ্যমে।
উদাহরণস্বরূপ উইন্ডোজ ৮ বিল্ড কনফারেন্সে উপরের ছবি-পাসওয়ার্ডটি দেয়া হয়। এটি আনলক করার জন্য ব্যবহারকারী মেয়েটির নাকে একবার ট্যাপ করেন (টাচস্ক্রিনে আলতো ছোঁয়াকে ট্যাপ বলা হয়), তারপর লেমোনেডের গ্লাসে একবার ট্যাপ করেন এবং সবশেষে পিয়ারের কোণ থেকে লেমোনেডের গ্লাস পর্যন্ত একটি সরল রেখা বা লাইন আঁকেন। ব্যস, স্ক্রিনটি আনলক হয়ে যায়। এর মাধ্যমে কেউ আন্দাজই করতে পারবে না আপনি কী পাসওয়ার্ড দিয়ে রেখেছেন আপনার স্ক্রিনে।

লকস্ক্রিনে নোটিফিকেশন

কাজ না করার সময় আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো কম্পিউটার লক করে রাখি। কিন্তু প্রায়ই আবার বারবার লক খুলে দেখি ফেসবুকে বা চ্যাটে কেউ কোনো মেসেজ পাঠালো কি না, অথবা ইনবক্সে কোনো বার্তা এলো কি না। কাজটি যদি আপনার কাছে এতোদিন ঝামেলাদায়ক মনে হয়ে থাকে, তাহলে আরেকটি সুখবর আপনার জন্য। উইন্ডোজ ৮ স্ক্রিন লকড থাকা অবস্থায়ই যাবতীয় মেসেজ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন দেখাবে। এতে করে আপনি এক দৃষ্টিতেই বুঝে নিতে পারবেন স্ক্রিন আনলক করার সময় হয়েছে কি না।

সিস্টেম রিফ্রেশ

উইন্ডোজ আনস্টেবল হয়ে গেছে? ভারি কোনো অ্যাপ্লিকেশন চালানোয় রিসোর্সগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না? সলিউশন হচ্ছে রিস্টার্ট করা, ঠিক না? কিন্তু বেছে বেছে চালু করা মিউজিক, অথবা ব্রাউজারে খুলে রাখা এতগুলো ট্যাব আবার রিস্টার্ট করতে হবে ভাবতেই মেজাজ খারাপ হওয়ার মানেই এই নয় যে আপনি বদমেজাজী। তবে খুশির খবর হলো, উইন্ডোজ ৮-এ আসছে সিস্টেম রিফ্রেশ নামের নতুন এক সুবিধা যা আপনার কম্পিউটারকে ঠিক আগের জায়গায় রেখেই উইন্ডোজ (সফটওয়্যার)-কে রিফ্রেশ করে তুলবে যাতে করে কাজের গতি আবার ফিরে পাওয়া যায়।

নতুন টাস্ক ম্যানেজার

উইন্ডোজে সর্বাধিক ব্যবহৃত ইউটিলিটিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টাস্ক ম্যানেজার। প্রসেস কিল করতে, আনরেসপনসিভ অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করতে ও নানা কাজে এই ইউটিলিটিটির ব্যবহার অনিবার্য। তবে উইন্ডোজের এতো এতো সংস্করণ আসছে কিন্তু টাস্ক ম্যানেজারে কোনো পরিবর্তন আসছে না কেন এই প্রশ্ন যদি আপনার মনে এসে থাকে, তাহলে টেলিপ্যাথির মাধ্যমেই হোক আর যেভাবেই হোক তা মাইক্রোসফটের কানে পৌঁছে গেছে। তাই তো নতুন রূপের টাস্ক ম্যানেজার নিয়ে হাজির হচ্ছে উইন্ডোজ ৮। (উল্লেখ্য, উপরের চিত্রে টাস্কবার দেখে টাশকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটি এখনও ডেভেলপার প্রিভিউতে রয়েছে তাই সবকিছু ঠিকঠাকমতো নেই।)

বুড়ো আঙুল টাইপিং

বিভিন্ন ট্যাবলেট ডিভাইসে টাইপ করার সময় কোয়ের্টি কিবোর্ডে কখনো কী এমনভাবে টাইপ করতে পারবেন যাতে করে আপনার দুই হাত ট্যাবলেটের দুই প্রান্তে ধরা থাকবে এবং টাইপ করবেন কেবল বুড়ো আঙুল ব্যবহার করে? ভাবতেই নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এমনটা করা গেলে আসলেই টাইপিং সহজ হয়ে যেতো। আর তাই মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এইটে এনে দিয়েছে এই সুবিধা। বোঝাই যাচ্ছে সত্যি সত্যিই ট্যাবলেট ডিভাইসের জন্যও প্রস্তুত হচ্ছে উইন্ডোজ এইট।

শেয়ার চার্ম

মাইক্রোসফটের আরেকটি প্রায়োরিটি হলো ইন্টারঅ্যাকটিভিটি। আর তাই শেয়ার চার্ম নামের নতুন এই সাইডবারটি যোগ করা হচ্ছে উইন্ডোজ এইটে যার মাধ্যমে আপনি মূহুর্তের মধ্যেই যা দেখছেন বা পড়ছেন তা শেয়ার করতে পারবেন যার সঙ্গে ইচ্ছে তার সঙ্গেই।

র‌্যাম?

এতক্ষণের ভিজুয়াল সব বিষয় দেখে মনে এই ধারণা আসা অস্বাভাবিক কিছু নয় যে এই উইন্ডোজ চালাতে না জানি কত র‌্যামের প্রয়োজন হবে। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই যে, উইন্ডোজ এইটে স্বভাবতই উইন্ডোজ সেভেনের চেয়েও কম র‌্যাম প্রয়োজন হবে। যেখানে উইন্ডোজ সেভেন স্টার্টআপে ৪০৪ মেগাবাইট র‌্যাম খরচ করে, সেখানে উইন্ডোজ এইট নিচ্ছে মাত্র ২৮১ মেগাবাইট র‌্যাম। আর এটি মাত্র ডেভেলপার বেটা সংস্করণে রয়েছে। অর্থাৎ, আরও উন্নতি সাধিত করা হবে যাতে করে র‌্যাম তুলনামূলকভাবে আরো কম প্রয়োজন হয়। এই দিক বিবেচনা করলে মাইক্রোসফটের প্রশংসা আরেকবার হয়তো করতেই হয়।

Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger