চাঁদের বুকে স্টেশন : জ্বালানি আসবে চাঁদ থেকে

|
ছোট বেলা মা বলতেন, আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা। মাকে বলেছিলাম চাঁদ তোমার মামা হলে আমার তো নানা হবে। আপু পড়েছিল বাঁশ বাগানে মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ। বড় হয়ে জেনেছিলাম চাঁদ আসলে কারও মামা বা নানা নয় এটি আমাদের পৃথিবীরই একটি উপগ্রহ। বিজ্ঞান বইয়ে পড়েছিলাম চাদের নিজস্ব্য কোন আলো নেই। সন্ধ্যা বেলা সবাই মিলে যখন উঠানে খেলতাম তখন চাদের দিকে তাকিয়ে দৌড়াতাম আর ভাবতাম চাঁদ বুজি শুধু আমার সাথেই থাকে। ছোট আপু বিশ্বাস করতনা। সে নিয়ে আমাদের কত জগড়া। আজ আর চাঁদ রূপ কথার কোন আশ্চর্য দেশ নয়।
মানুষ সেই কবে জয় করেছে চাঁদ। বিজ্ঞানীরা এখন চাদকে নিয়ে খেলছেন হাতের মুটোয় । বিজ্ঞানীদের ধারনা, এই উপগ্রহে রয়েছে অনেক ধরনের দুস্প্রাপ্য খনিজ পদার্থ। চাদে রয়েছে লোহা, স্বর্ণ, টাইটান, প্লাটিনাম ও ইউরেনিয়ামের খনি। আরও রয়েছে হিলিয়াম থ্রি গ্যাস যা পাওয়া যায় কেবল মাত্র সূর্যের আলোতেই। এটি হচ্ছে আলোর একটি কনিকা, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করে। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সৌর বায়ুর কারনে এই হিলিয়াম থ্রি পৃথিবীর বুকে জমা হতে পারেনা। কিন্তু চাঁদেতো কোন বায়ু নেই, তাই এই হিলিয়াম থ্রি সেখানে বাধা পায়না। বিজ্ঞানীদের ধারনা, বিলিয়ন বিলিয়ন বছর ধরে এই হিলিয়াম থ্রি চাদের বুকে জমা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন রিগুলিথ। বিজ্ঞানীদের ধারনা এই হিলিয়াম থ্রি বা রিগুলিথ পৃথিবীর কয়েকশ বছরের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে পারবে। আর এ কারনেই বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন চাদের বুকে একটি স্টেশন তৈরি করবেন যেখানে কাজ করবে তাদের তৈরি কিছু রোবট। ইতমধ্যে তারা রোবট তৈরিতে হাত দিয়েছেন। কাজটি করছে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এখানকার একজন বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক কৃষ্ণার ও তার সহযোগীরা ছয় পা বিশিষ্ট একটি রোবট মডেল তৈরি করেছেন। যেহেতু পৃথিবী থেকে হাজার মাইল দূরে চাদের বুকে রোবট গুলো কাজ করবে তাই বিজ্ঞানীরা চাচ্ছেন দ্রুত গতি ও নিজস্ব বুদ্ধিমক্তা সম্পন্য রোবট তৈরি করতে। যারা প্রতিকূল পরিবেশে নিজেরা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। টিক মত কাজ চললে অচিরেই হয়ত চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহ থেকে আমরা জ্বালানির উৎস খুঁজে পাব।

Blogger templates

.
Recommended Post Slide Out For Blogger