

সে প্রায় ১০০ বছর আগের কথা। হিমালয়ের প্রায় ১ হাজার মানুষ রহস্যজনকভাবে মারা গেল। কিন্তু কীভাবে? কারো তো মাথায়-ই আসে না। সেই রহস্যের উদ্ঘাটন হয়েছে এই কিছুদিন আগে। ওই ১ হাজার লোক মারা গিয়েছিলো তুষারপাতে! ঠিক তুষারপাত নয়, বলতে পারো বড়ো বড়ো তুষারের চাঁইয়ের বৃষ্টিতে। একেকটা তুষার ছিলো ক্রিকেট বলের মতো বড়ো! অমন বড়ো বড়ো তুষার কারো মাথায় পড়লে, সে কী আর বাঁচতে পারে? আর আকাশ থেকেই যখন পড়েছে, গতি তো আর কম ছিলো না; কমসে কম ১০০ মাইল বেগে তো হবেই! অতো বড়ো তুষারের বৃষ্টি কীভাবে হলো? আকাশে মেঘ থাকে তুষারের মতো হয়ে। তারপর সেই মেঘ গলে গলে বৃষ্টি হয়। আর ঠাণ্ডা অঞ্চলে মেঘ পুরোপুরি গলতে পারে না বলে বৃষ্টি না হয়ে তুষারপাত হয়। কিন্তু হিমালয়ে সেদিন মনে হয় ঠাণ্ডা একটু বেশিই ছিলো। আর তাই গলে তুষারের সাইজও খুব একটা ছোট হতে পারেনি। আর এই কারণে মারা গিয়েছিলো প্রায় ১ হাজার মানুষ।

তোমার জন্য স্নোবল!
হিমালয়ের তুষারপাত তো ছিল ভয়ংকর, যাকে বলে একেবারে প্রাণঘাতী। কিন্তু শীতপ্রধান দেশে তুষারপাত কিন্তু খুবই মজার ব্যাপার। তুষার পড়তে শুরু করলেই তোমাদের মতো বয়স যাদের, তারা তুষার দিয়ে বল বানিয়ে খেলতে শুরু করে দেয়। আর সেই বল যতো নরম, তোমাকে ওটা দিয়ে যতো জোরেই মারা হোক না কেন, তুমি মোটেও ব্যাথা পাবে না! কিন্তু যদি অমন কোন দেশে গিয়ে বাসা থেকে বের হয়েই দেখো, তোমার জন্য তুষার পড়ে পড়ে একেবারে তুষারের বল হয়েই বসে আছে? এমনও কিন্তু হয়। এটা কীভাবে হয়? তুষার কিন্তু বরফেই পড়ে। কিন্তু কেন জানি সেই তুষার বরফের সাথে লেগে যায় না। উপরে পড়ে জমা হতে থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, এমন জমা হওয়া কিছু তুষারকে বাতাস বয়ে নিয়ে যায়। আর তখন ওর গায়ে অন্য তুষার লেগে যেতে থাকে। ফলাফল, প্রাকৃতিকভাবেই তুষারের বল কিংবা তুষারের ড্রাম তৈরি হয়ে যায়!

দৈত্য ঢেউ, ঢেউদের দৈত্য
ধরো, খুব শখ করে তুমি একবার জাহাজে উঠেছো, গিয়েছো সমুদ্রভ্রমণে। জাহাজের ডেকে বসে বসে মহানন্দে দেখছো সমুদ্র। এমন সময়, হঠাৎ করে দেখলে, তোমার সামনে দশতলা বিল্ডিংয়ের মতো উঁচু একটা ঢেউ বেপরোয়া ট্রেনের মতো ছুটে আসছে! কি করবে বলো তো? ভাবছো, গাঁজাখুরি গল্প বলছি? মোটেই না, এমন হতেই পারে। বলবে, ওর কথা তো জানি, ওটাকে সুনামি বলে। না, আমি সুনামির কথা বলছি না। সুনামি তো সাগরে তেমন বিপজ্জনক নয়, যখন তীরে আসে তখনই অমন ভয়ংকর হয়ে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আর এই দৈত্যাকার ঢেউ সাগরের যেখানে-সেখানে যখন-তখন দৈত্যাকার হয়ে আছড়ে পড়তে পারে। বিজ্ঞানীরা এখনো নাকি এই ভয়ংকর ঢেউয়ের কারণও আবিষ্কার করতে পারেননি। কেবল এটুকুই জানাতে পেরেছেন, এই দৈত্য ঢেউ যখন-তখন বিনা নোটিশে আবির্ভূত হতে পারে! কী ভয়ংকর কথা!


টর্নেডোর কথা তো শুনেছোই। ভয়ংকর এক রকমের ঝড় হলো এই টর্নেডো। আমাদের দেশেরও কিন্তু একটা বিখ্যাত টর্নেডো আছে- কেন কালবৈশাখী ঝড়ের কথা মনে নেই বুঝি? আচ্ছা, এখন বলো তো, ঝড়ের গতিবেগ কতো হলে সেটাকে ভয়ংকর বলা যায়? ঘণ্টায় ৭০ মাইল বেগের একটা ঝড়ের এতো শক্তি হয়, ওটা একটা আস্ত বাড়িকে তুলে নিয়ে যেতে পারে! ১৯৯৯ সালে আমেরিকার ওকলাহোমাতে এক ভয়ংকর টর্নেডো হয়েছিল, আর তার গতিবেগ ঘণ্টায় কতো ছিল জানো? ৩১৮ মাইল! ওটাই পৃথিবীর সর্বোচ্চ গতিবেগের টর্নেডো। তবে গতিবেগ বেশি হলেও তুলনামূলকভাবে ক্ষতি কমই হয়েছিলো। কিন্তু সেই ক্ষতিও কম নয়, ২ হাজার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আরো হাজার চারেক ঘরবাড়ি। আর অন্যান্য হিসাব না-ই বা দিলাম। তবে ওকলাহোমার লোকজনের বরাত ভালো। কেনো? ৩০০ মাইলের বেশি গতিবেগের একটা টর্নেডো কতো ভয়ংকর হতে পারে জানো? ওটা মাটি থেকে ঘাস পর্যন্ত উপড়ে ফেলতে পারে, এমনকি রাস্তা থেকে ফুটপাথও!


আচ্ছা, টর্নেডো তো হল, কিন্তু সেই টর্নেডো যদি কোন বাড়ি উড়িয়ে না নিয়ে একটা আস্ত পুকুর বা জলাশয়ের পানি উড়িয়ে নিয়ে যায়? ভাবছো, পানিই তো বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়বে। উঁহু, ব্যাপারটা এত্তো সোজা নয়। কেন? আরে, সেই পুকুরে বুঝি মাছ নেই, ব্যাঙ নেই? এখন সেই মাছ আর ব্যাঙ কোথায় যাবে? বৃষ্টির সাথে যদি ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করতে করতে ব্যাঙ ঝরতে থাকে, সে কী আর ভালো লাগবে? বৃষ্টিতে ভেজার মজাটাই তো শেষ! এমন ঘটনাও কিন্তু ঘটেছে। ইউরোপিয়ান দেশ সার্বিয়ার এক ছোট্ট শহরে একবার এরকম ব্যাঙ-বৃষ্টি হয়েছিল। আর তাই নিয়ে মানুষের মনে কতো রকমের জল্পনা! কেউ বলতে লাগল এটা কারো অভিশাপের ফল, কেউ বলতে লাগল আকাশে বোধহয় ব্যাঙ বহন করছিল এমন কোন প্লেনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। কিন্তু আসলে যে কী হয়েছিল, সে তো বুঝতেই পারছো। কোন এক টর্নেডোতে উড়িয়ে নেয়া ব্যাঙ সার্বিয়াতে বৃষ্টির সাথে ঝরে পড়েছিল। কী বিচ্ছিরি ব্যাপার!

আগুনের নৃত্য!
ধরো, একদিন তুমি প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে পড়েছো। চারিদিকে বজ্রপাতও হচ্ছে। তুমি কোন একটা নিরাপদ জায়গায় দাঁড়িয়ে ঝড় দেখছো, আর তো কিছু করার-ই নেই। এমন সময় হঠাৎ একটা বজ্রপাত হলো, আর তারপর একটা আগুনের কুণ্ড চারপাশে নেচে বেড়াতে লাগল! ভয় পাবে না? ধুর, কী সব আবোল তাবোল বকছি- এমনই তো ভাবছো? এমন অদ্ভ‚ত কাণ্ডও কিন্তু সত্যি সত্যিই হয়। মাঝে মাঝে এমন আগুনের কুণ্ড ছোট্ট বিস্ফোরণও ঘটায়। কিন্তু কথা হল, কীভাবে হয় এটা? বিজ্ঞানীরা এর একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন এরকম- বজ্রপাত মাটিকে স্পর্শ করলে মাটিতে সিলিকন নামের এক ধরনের পদার্থ আছে, ওটা বজ্রপাতকে শুষে নেয়। এই প্রক্রিয়ায় অনেক সময় সিলিকনের একটা বাবলের মতো তৈরি হয়, আর ওটাই বাতাসের অক্সিজেন দিয়ে জ্বলতে থাকে। এটা তো জানোই যে, অক্সিজেন নিজে জ্বলে না, কিন্তু অন্যকে জ্বালাতে সে ভীষণ পটু।
কী, এগুলো বুঝি আগে থেকেই জানতে? আর এগুলো পড়ার পর তো মনে হয় এটা বুঝতে পেরেছো, প্রকৃতির কতো ক্ষমতা! সুতরাং, আমাদের কী করা উচিত বলো তো? ওকে মোটেও ঘাটানো উচিত না। ঘাটালে যে ও কী করে বসবে, কে জানে!
ধরো, একদিন তুমি প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে পড়েছো। চারিদিকে বজ্রপাতও হচ্ছে। তুমি কোন একটা নিরাপদ জায়গায় দাঁড়িয়ে ঝড় দেখছো, আর তো কিছু করার-ই নেই। এমন সময় হঠাৎ একটা বজ্রপাত হলো, আর তারপর একটা আগুনের কুণ্ড চারপাশে নেচে বেড়াতে লাগল! ভয় পাবে না? ধুর, কী সব আবোল তাবোল বকছি- এমনই তো ভাবছো? এমন অদ্ভ‚ত কাণ্ডও কিন্তু সত্যি সত্যিই হয়। মাঝে মাঝে এমন আগুনের কুণ্ড ছোট্ট বিস্ফোরণও ঘটায়। কিন্তু কথা হল, কীভাবে হয় এটা? বিজ্ঞানীরা এর একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন এরকম- বজ্রপাত মাটিকে স্পর্শ করলে মাটিতে সিলিকন নামের এক ধরনের পদার্থ আছে, ওটা বজ্রপাতকে শুষে নেয়। এই প্রক্রিয়ায় অনেক সময় সিলিকনের একটা বাবলের মতো তৈরি হয়, আর ওটাই বাতাসের অক্সিজেন দিয়ে জ্বলতে থাকে। এটা তো জানোই যে, অক্সিজেন নিজে জ্বলে না, কিন্তু অন্যকে জ্বালাতে সে ভীষণ পটু।
কী, এগুলো বুঝি আগে থেকেই জানতে? আর এগুলো পড়ার পর তো মনে হয় এটা বুঝতে পেরেছো, প্রকৃতির কতো ক্ষমতা! সুতরাং, আমাদের কী করা উচিত বলো তো? ওকে মোটেও ঘাটানো উচিত না। ঘাটালে যে ও কী করে বসবে, কে জানে!
